জলপাইগুড়ি: ‘মৃত্য়ু’ হয়েছে বৃদ্ধার। অথচ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন তিনি, সময় হলে ভোটও দিচ্ছেন নিয়ম মেনে। না কোনও অলৌকিক গল্প নয়। ঘটনাটি একেবারে খাঁটি বাস্তব। কোনও এক ‘জাদুবলে’ ৮০ বছরের জীবিত বৃদ্ধাকে মৃত বানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। খাতায়-কলমে মৃত হওয়ায় বার্ধক্য ভাতা না দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে ধূপগুড়ির বানারহাটে। ‘দুয়ারে সরকার’ থেকে শুরু করে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ি, সব জায়গায় গিয়েছেন তিনি। মিলছে না ভাতা। বয়সের ভারে আজকাল কানে কম শোনেন তিনি, ঠিকমতো চোখেও দেখতে পান না। কিন্তু তাই বলে তিনি মৃত তো নন।
জলপাইগুড়ি জেলার বানারহাট ব্লকের সাকোয়াঝোরা-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের সজনাপাড়া এলাকার বাসিন্দা রঞ্জিতা মজুমদার (৮০)। কাঁচা বাড়িতে কোনও ক্রমে বাস করেন। ছাদ থেকে জল পড়া আটকাতে টাঙানো আছে প্লাস্টিক। পাটকাঠির বেড়া দেওয়া ঘরে কনকনে শীতে কোনো রকমে মাথা গুঁজে থাকেন বৃদ্ধা। তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “সব জায়গায় গিয়েছি। আমাকে বলা হয় আমি নাকি মৃত। ভোট দিচ্ছি, সব জায়গায় যাচ্ছি, কে যে মৃত বলল জানি না।”
অভিযোগ প্রায় চার বছর ধরে প্রশাসনের দরজায় ঘুরছেন তিনি। গিয়েছেন ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবিরেও। স্থানীয় প্রধান, পঞ্চায়েত, বিডিও- প্রত্যেকের অফিসে ঘুরেও মেলেনি বার্ধক্য ভাতা। সরকারি খাতায় তিনি এখন মৃত, সেই কারণেই ভাতা পাচ্ছেন না তিনি। এটাই বলা হচ্ছে সব দফতর থেকেই। ছেলেদের অবস্থাও খুব একটা ভাল নয়, দিন এনে দিন খেয়ে কোনও রকমে চলে সংসার। ভাতা বন্ধ হওয়ায় কার্যত বিপাকে পুরো পরিবার।
জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নুরজাহান বেগম এই ইস্যুটিতে নজর দেবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “হয়ত কম্পিউটারের ভুল হতে পারে। দিদি তো আমাদের বসিয়ে রাখেন না, আমাদের অনেক কাজ থাকে। ভুল হতেই পারে। আমাকে বৃদ্ধার নাম, ঠিকানা পাঠান, আমি দেখব কেন এরকম হচ্ছে।”