জলপাইগুড়ি: মুখের সামনের অংশ খুবলে গিয়েছে। চাপ চাপ রক্ত পড়ে মাটিতে। দেখে মনে হচ্ছে, ধারালো কোনও অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। ফের এক চিতাবাঘের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল জলপাইগুড়ি বন বিভাগের অন্তর্গত দলগাঁও রেঞ্জের বীরপাড়াতে।
মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের গেরগেন্ডা প্রাইমারি স্কুলের সামনে ওই চিতাবাঘের দেহটি পড়েছিল। সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা কাজে যাওয়ার সময়ে রক্তাক্ত অবস্থায় স্কুলের সামনে ওই চিতাবাঘটিকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাঁরা খবর দেন বনদফতরে। বনকর্মীরা গিয়ে চিতাবাঘের দেহটি উদ্ধার করেন।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, রাতে গাড়ির সামনে কোনওভাবে চলে এসেছিল চিতাবাঘটি। চালক হয়তো গাড়ি না থামিয়ে চালিয়ে দেন। তাতেই ধাক্কা লেগে মৃত্যু। মুখের সামনের অংশ থেঁতলে গিয়েছে কার্যত।
তবে বনকর্মীরা জানাচ্ছেন, কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তার তদন্ত শুরু করছে বনদফতর। দেহটি ময়না তদন্ত করা হবে। এরপরই তার মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলে বনদফতর জানিয়েছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “সকালে আমাদেরই এক গ্রামবাসী কাজে যাওয়ার সময়ে নদীর ধারে চিতাবাঘের দেহটি মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পঞ্চায়েত প্রধানকে আমরা বিষয়টি জানাই। খবর যায় বন দফতরে। বনকর্মীরা এবার তদন্ত করে দেখবেন কীভাবে মৃত্যু হয়েছে।”
প্রসঙ্গত দিন চারেক আগেই আলিপুরদুয়ারের রাজাভাতখাওয়া এলাকায় দ্রুত গতির গাড়ির ধাক্কায় মৃত্যু হয় একটি লেপার্ড ক্যাটের। চিতার মতো ডোরাকাটা দাগের দেহ পড়ে থাকতে দেখে তারা চিতাশাবক ভেবেই ভুল করেছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। বক্সার ওয়েষ্ট দমনপুর রেঞ্জ অফিসে কর্মীরা গিয়ে দেখেন, সেটি লেপার্ড ক্যাট। রাস্তা পারাপারের সময় দ্রুত গতির কোনও গাড়ির ধাক্কায় প্রাণীটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে ডুয়ার্সের গ্যান্দ্রাপাড়া চা বাগানে মাথা কাটা অবস্থায় উদ্ধার হয়েছিল চিতাবাঘের দেহ। বনদফতর সেই সময় ধারণা করেছিল সম্ভবত মাংস খাওয়ার জন্য চিতাবাঘটিকে হত্যা করা হয়েছে।
চলতি বছরেই জুলাই মাসে ডুয়ার্সের চা বাগান থেকে উদ্ধার হয় দুটি পূর্ণ বয়স্ক চিতাবাঘের দেহ। যে সময় দেহ উদ্ধার হয়েছিল, তখন তাতে পচন ধরতে শুরু করেছিল। বনকর্মীরা মনে করেছিলেন, মৃত্যু তার অনেকদিন আগেই হয়েছে। এই ঘটনার শোরগোল পড়ে গিয়েছিল।
তবে এই চিতাবাঘের দেহ উদ্ধারের ঘটনার চোরাশিকারিদের হাত রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। চিতাবাঘের দাঁত কিংবা শরীরের কোনও অংশে অন্য কোনও ক্ষত রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Jalpaiguri Bear Panic: ড্রোন উড়িয়েও মিলল না খোঁজ, জলপাইগুড়িতে এখনও অধরা সেই ভালুক