জলপাইগুড়ি: করোনা (Corona) সংক্রমণ রুখতে যেখানে সংক্রমণ বেশি সেই জায়গাগুলিকে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট (Micro Containment Zone) করেছে রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোনের বোর্ড খুলে মাটিতে ফেলে দিয়ে অবাধে চলছে যাতায়াত! এমনই ঘটনা দেখা গেল জলপাইগুড়ির পুর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডে।
জলপাইগুড়ি পুর এলাকার ২ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়াকারগঞ্জ এলাকাকে গত শনিবার মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করে এলাকাকে সিল করেছে প্রশাসন। বাসিন্দাদের প্রয়োজনীয় জিনিস বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোনও নোটিস ছাড়া আচমকাই এলাকাক সিল করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তারা বিক্ষোভ দেখায় এবং বোর্ড খুলে বিধিনিষেধ অগ্রাহ্য করেই যাতায়াত করছে বাসিন্দারা।
এলাকাবাসীর যুক্তি সেখানে বর্তমানে কোনো করোনা আক্রান্ত রোগী নেই। তাহলে কেন কন্টেনমেন্ট জোন। তাদের আরও দাবি, এলাকায় দিন আনি দিন খাই মানুষজন বেশি। বতাই তারা মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোনে যে সব সরকারী সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে তা যদি না দেওয়া হয় তবে তাদের পক্ষে গৃহবন্দি হয়ে বসে থাকা অসম্ভব। তাই কন্টেনমেন্ট জোনের তোয়াক্কা না করে যাতায়াত করছেন তারা।
অন্যদিকে সংবাদমাধ্যমের কাছে বিষয়টি জানার পর পুর প্রশাসক জানিয়েছেন যেহেতু জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত কয়েক সপ্তাহের করোনা পরিস্থিতি রিপোর্ট বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এখানে তাঁদের কিছু করণীয় নেই। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্ত মানতেই হবে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন করার মাত্র দু’দিন পর কেমন আছে ওয়াকারগঞ্জ এলাকা তা দেখতে সংবাদমাধ্যও ওই এলাকায় গেলে দেখা যায়, খুলে ফেলা হয়েছে মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন লেখা ফ্লেক্স। আর সেখানে অবাধে যাতায়াত করছে মানুষজন। যাতায়াত করছে ফেরিওয়ালা। কাজ করছে নির্মাণ শ্রমিকরা। অর্থাৎ, করোনা সংক্রান্ত কোনো বিধিনিষেধ মানার চিহ্নই খুঁজে পাওয়া যায়নি।
শ্যামলী দাস নামে এক এলাকাবাসী জানালেন, তাঁদের এলাকায় মাত্র দু’টি জলের কল। আর দুটোই খারাপ। তাই পানীয় জল আনতে তাঁরা বাইরে বেরতে বাধ্য হয়েছেন। গৌরব দাস নামে অপর এক এলাকাবাসী জানালেন, “আমরা দিন আনি দিন খাই। কাজ করতে না গেলে আমাদের পরিবারে খাওয়া জুটবে না। আমরা সরকারি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। তাই আমাদের পক্ষে এই নির্দেশিকা মানা অসম্ভব।”
আরও পড়ুন: কোলাঘাটে ৭ শিশুর সাতরকম করোনা উপসর্গ! কোভিডের তৃতীয় ঢেউ নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকেরা
ঘটনায় পুর প্রশাসক বোর্ডের সদস্য সন্দীপ মাহাতো বলেন সমস্যা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানুষের স্বার্থেই তো এলাকা মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন করা হয়েছে। নিয়ম মানতেই হবে। নইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওয়াকিবহাল মহলের ধারনা, কেন মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন করা হয়েছে তা নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো সচেতনতামূলক প্রচার করা হয়নি। পাশাপাশি নেই নজরদারিও। একইসঙ্গে অসহায় মানুষরা খাদ্যসামগ্রী-সহ অন্যান্য সাহায্য পাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন: ‘তর্ক-বিতর্কে যাব না’, পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি থেকে পিছু হঠলেন জন বার্লা?