TV9 Bangla Digital | Edited By: জয়দীপ দাস
Dec 31, 2022 | 2:49 PM
২০২২ সালের শুরুতেই ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনার (Rail Accident) সাক্ষী ছিল বাংলা। ১৩ জানুয়ারি বিকালে জলপাইগুড়ি থেকে গৌহাটি যাওয়ার পথে ময়নাগুড়ির কাছে লাইনচ্যুত হয়ে যায় বিকানের এক্সপ্রেস। বিকাল ৫টা নাগাদ ঘটে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা।
ময়নাগুড়ির (Maynaguri) দোহামনিতে গৌহাটি বিকানের এক্সপ্রেসের চালক আচমকা এমনভাবে ব্রেক কষেন যে ট্রেনটির একটি বগির সঙ্গে অন্য বগির সংঘর্ষ হয়। মোট ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। একটি বগির উপর একটি বগি উঠে যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ।
রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান ও রেলের ডিজি সেফটিও ঘটনাস্থলে যান। নবান্নের নির্দেশ পেয়ে ছুটে যান জেলা শাসক, এস পি, আইজি নর্থ বেঙ্গল। SDRF-র টিমও দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া বগিগুলি কেটে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করতে আনা হয় গ্যাস কাটার। ছুটে আসে অ্যাম্বুলেন্স। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুকনো খাবার, জল, চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে ছুটে আসে একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় ৯ জন যাত্রীর মৃত্যুর খবর মেলে। আহত হন শতাধিক মানুষ। দুর্ঘটনা কারণ জানতে তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয় রেলের তরফে। দুর্ঘটনার পর অনুমান করা হচ্ছিল স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি ছিল ট্রেনের গতি। সে কারণেই গতির সামাল দিতে না পেরে জরুরি ব্রেক কষেন চালক। বেলাইন হয়ে যায় ট্রেনটি।
সিগনালিং সমস্যা, রেল লাইনে ফাটল, চালকের কোনও ভুলের কারণেও দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলেও শুরুতে অনেকেই মনে করছিলেন। তবে সমস্ত জল্পনায় জল ঢেলে চিন্তা আরও বাড়িয়ে দেয় কমিশন অব রেলওয়ে সেফটির (CSER) রিপোর্ট।
কমিশন অব রেলওয়ে সেফটির (CSER) রিপোর্টে সামনে আসতে বাড়তে থাকে চাপানউতর। প্রাথমিক তদন্তে রেলের আধিকারিকদের অনুমান ছিল ট্রাকশন মোটরের ত্রুটির জেরে এই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সিএসইআরের রিপোর্টে কার্যত সেই তত্ত্বেই সিলমোহর পড়ে। বলা হয়, ট্রাকশন মোটরের দুরাবস্থার জেরেই করুণ পরিণতি হয় দূরপাল্লার এই ট্রেনটির। প্রতি ৪৫০০ কিলোমিটার পর ট্রিপ ইন্সপেকশন করার কথা থাকলেও দুর্ঘটনার কবলে পড়া বিকানের এক্সপ্রেস সেটা মানা হয়নি। সূত্রের খবর, শেষ ট্রিপ ইন্সপেকশনের পর প্রায় ১৮ হাজার কিলোমিটার ট্রেনটি চলেছিল। কিন্তু, তারমধ্যে করা হয়নি ইন্সপেকশনের কাজ। যার ফলে ধরা পড়েনি যান্ত্রিক গোলযোগ। এমনটাই মত তদন্তকারীদের।