Jalpaiguri: সাজানো ঘটনা? শববাহী যান ‘সাহায্য’ করতে গিয়ে গ্রেফতার অঙ্কুর
Jalpaiguri: উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার শীতের সকালে মৃত লক্ষ্মীরানির দেহ চাদরে পেঁচিয়ে কাঁধে নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন বছর চল্লিশের তাঁর ছেলে।
জলপাইগুড়ি: অর্থাভাবে মায়ের মৃতদেহ শববাহী গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ ছিল না। তাই মায়ের দেহ কাঁধে তুলে শ্মশানের পথে হাঁটা দিয়েছিলেন দিনমজুর ছেলে। জলপাইগুড়িতে এমন মর্মান্তিক ছবি প্রকাশ্যে এসেছে বৃহস্পতিবার। তারপরই ওই মৃতদেহ সৎকারের জন্য এগিয়ে আসে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সাহায্য করা হয় শববাহী গাড়ি দিয়ে। তবে, এই ঘটনা সাজানো বলে অভিযোগ ওঠে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হয় ওই সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুর দাসকে। অঙ্কুরের গ্রেফতারি নিয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যিনি সাহায্য করতে এলেন, তাঁকেই কেন গ্রেফতার করা হল? উঠছে প্রশ্ন।
সূত্রের খবর, এই ঘটনার পর অঙ্কুর দাসের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিল অ্যাম্বুলেন্স চালক অ্যাসোসিয়েশন। তাঁদের বক্তব্য গোটা বিষয়টিই ছিল সাজানো। মঙ্গলবার দুপুরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোতোয়ালি থানায় ডেকে পাঠানো হয় অঙ্কুরকে। রাত অবধি টানা জেরার পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এ প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ তাঁকে আদালতে তোলা হবে।”
অঙ্কুরের গ্রেফতারি নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালক অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দিলীপ দাস বলেন, “আগে থেকেই বিষয়টি প্ল্যান করা ছিল। পাঁচ মিনিটের মধ্যে মিডিয়া তৈরি। এখন চাইছি, অঙ্কুর দাস এবং তাঁকে যাঁরা সাহায্য করেছিলেন তাঁদের শাস্তি হোক।” মৃত লক্ষ্মীরানি দেওয়ানের স্বামী জয়কৃষ্ণ দেওয়ান বলেন, “সাজানো ঘটনা নয়। সাংবাদিকরা কিছুই করেনি। যারা এই সব রটাচ্ছে তাঁরাই মিথ্যে বলছে। সংবাদ মাধ্যম প্রচার করে ঠিক করেছে। আমি স্বেচ্ছায় কাঁধে করে মৃতদেহ নিয়ে গিয়েছি। কারণ আমি তিন হাজারের কাছে মাথা নত করতে চাইনি।”
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার শীতের সকালে মৃত লক্ষ্মীরানির দেহ চাদরে পেঁচিয়ে কাঁধে নিয়ে শ্মশানের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন বছর চল্লিশের তাঁর ছেলে। পিছনের সেই দেহকে কাঁধ দেন তাঁর স্বামী। এ দৃশ্য প্রকাশ্যে আসতেই ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়। প্রশ্নের মুখে পড়ে প্রশাসন। গত বুধবার জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন লক্ষ্মীরানি। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। পরিবারের দাবি, দেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য তিন হাজার টাকা চায় স্থানীয় অ্যাম্বুলেন্স। টাকা দেওয়ার সামর্থ্য ছিল না তাঁদের।
উল্লেখ্য, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিনামূল্যে শবযান পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালের ভেতর বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের দালালচক্রের অভিযোগ উঠছে। আরও অভিযোগ, যেমন খুশি টাকা নেওয়া হয় রোগীদের পরিবারের কাছ থেকে। অঙ্কুর দাসের দাবি, শবযান না পাওয়ার ঘটনাটি জানতে পেরে তাঁরা এগিয়ে এসে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সাহায্যের ‘পুরস্কার’ গ্রেফতার কেন? প্রশ্ন তুলছে অঙ্কুরের পরিবার।