জলপাইগুড়ি: লাগাতার বেড়েছে করোনা। ফলত আংশিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে রাজ্যে। ইতিমধ্যে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে যাতে না পড়ে তার কারণে। কিন্তু সেই সকল নির্দেশিকা উড়িয়েই গৃহশিক্ষককতা চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল এক গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য গোটা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষক ডাউকিমারি হাইস্কুলে পড়াতেন। কিন্তু সরকারি নিয়ম এবং কোভিড বিধিভঙ্গ করে বাড়িতে কোচিং সেন্টার চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পাড়ার অন্য গৃহ শিক্ষকরা এই অভিযোগ করতে শুরু করায় এলাকায় শুরু হয় উত্তেজনা। এদিকে আবার তাঁদের শিক্ষককে অপমান করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ করেন ছাত্রছাত্রীরা।
সূত্রের খবর, ডাউকিমারি ডিএন হাইস্কুলের শিক্ষক কল্যাণ সরকার মাস চারেক আগে অন্য স্কুল থেকে বদলি হয়ে এই স্কুলে যোগ দেন। স্কুলের পাশেই একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে তিনি কোচিং সেন্টার শুরু করেন। এলাকার অন্য সকল গৃহশিক্ষকদের অভিযোগ, নিজের স্কুলের পড়ুয়াদের বেশি মার্কাস পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তার কোচিং সেন্টারে ভর্তি করতেন অভিযুক্ত শিক্ষক। এই নিয়ে গৃহশিক্ষকদের সংগঠন এর আগেও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। স্কুলের প্রধানশিক্ষকের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছিলেন। যদিও এতে সমস্যার সমাধান হয়নি।
যদিও, ওই শিক্ষক তাতে কর্ণপাত না করেই কোচিং সেন্টার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এমনকি এই করোনা পরিস্থিতি এবং বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে প্রচুর সংখ্যক পড়ুয়া নিয়ে কোচিং সেন্টার চলছিল। এরপর বুধবার স্থানীয় বেশ কিছু গৃহশিক্ষক সেখানে আসেন এবং বিক্ষোভ দেখান। তৈরি হয় বচসাও। এরপর কোচিং ক্লাসে আসা পড়ুয়ারা স্কুল শিক্ষকের পক্ষ নিয়ে রাস্তায় বসে পড়ে অবরোধ শুরু করে। তাদের অভিযোগ, তাদের শিক্ষককে অপমান করা হয়েছে।
ওই স্কুল শিক্ষকের দাবি, পড়াশোনায় উন্নতির জন্য ছাত্রছাত্রীদের তিনি “ফ্রি” কোচিং দেন। কোনও রকম টাকা নেন না ছাত্রদের কাছ থেকে। স্কুল ছাত্রী সঙ্গীতা রায়, পুজন রায়, প্রমিলা রায়, প্রদিপ রায় বলেন, “সামনেই উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষা। এখন আমরা কোথায় যাব। স্কুলের শিক্ষকদের মত করে বাইরের শিক্ষক পড়াতে পারবে না। আর মাস্টারমশাই আমাদের বিনা বেতনে পড়ান।”
ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য বলেন, “সরকারি নিয়মকে অমান্য করে, করোনা বিধির অমান্য করে তিনি পড়ুয়াদের প্রাইভেটে পড়িয়ে যাচ্ছেন। আমরা আজকে তাই কথা বলতে গিয়েছিলাম। এর আগে আমরা স্কুলে ডেপুটেশন দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কর্ণপাত করেনি। উল্টো আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের ভুল বুঝিয়ে আটকে পথ অবরোধ করিয়েছেন।”