ধূপগুড়ি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে যে সব প্রকল্প শুরু করেছিলেন তার মধ্যে অন্যতম ‘সবুজ সাথী’। গত কয়েক বছর ধরে চলছে এই প্রকল্প। প্রতি বছর সাইকেল পাচ্ছেন হাজার হাজার পড়ুয়া। প্রত্যন্ত এলাকায় সরকারের দেওয়া সাইকেল নিয়েই স্কুলে যান পড়ুয়ারা। কিন্তু সেই সাইকেলে এবার নতুন বিপত্তি। নিখরচায় সাইকেল পেয়েও খুব একটা লাভ হচ্ছে না। নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে তবেই তা ব্যবহারযোগ্য করা হচ্ছে। অন্তত ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পড়ুয়ারা। জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির ঘটনা।
পড়ুয়া ও অভিভাবকদের অভিযোগ, সাইকেল তৈরি না করেই তুলে দেওয়া হচ্ছে পড়ুয়াদের হাতে। আর তাতেই ক্ষুদ্ধ ছাত্রছাত্রীরা। অভিভাবকরা বলছেন, চালানোর মতো অবস্থা না করেই তুলে দেওয়া হচ্ছে সাইকেল। টাকার খরচ করে সেগুলো মেরামত করে তবেই রাস্তায় নামানো সম্ভব হচ্ছে। একজন নয়, ধূপগুড়ি ব্লকের বিদ্যাশ্রম দিব্য জ্যোতি হাই স্কুলের। একাধিক পড়ুয়ার একই অভিযোগ।
এক অভিভাবক বলেন, “এমন অবস্থা যে, সাইকেল নিয়ে হাঁটতে হচ্ছে। আমাদের প্রশ্ন হল, সরকার যে সাইকেল দিচ্ছে তার এমন অবস্থা হবে কেন? কেন এর জন্য আমাদের টাকা খরচ করতে হবে?” তৃণমূলের জেলা সম্পাদক অরুপ দে এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমারও লক্ষ্য করেছি বিষয়টা। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষকদের বলে দেব, যাতে সাইকেলগুলো দেখে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে যাতে এরকম না ঘটে, তার জন্য বিডিও-র সঙ্গে কথা বলব।” বিডিও-র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন তোলেননি।
গ্রামীণ এলাকার ছেলেমেয়েদের কাছে স্কুলে যাওয়ার সমস্যা অনেকদিনের। দূরে দূরে স্কুল হওয়ায় যাতায়াত করতেই অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। সেই টাকা দেওয়ার সামর্থ্যও সবার থাকে না। যে পরিবারগুলির নুন আনতে পান্তা ফুরোয় তাদের পক্ষে প্রতিদিন ওই টাকা খরচ করা সম্ভব হয় না। পায়ে হেঁটেই স্কুলে যেতে হত তাঁদের। ওই পরিবারগুলির কথা ভেবেই রাজ্য সরকার এই সাইকেল দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই প্রকল্প নিয়েও এবার তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কেউ কেউ আবার খরচ না করতে পেরে সাইকেল বিক্রিও করে দিচ্ছেন।