জলপাইগুড়ি: কুয়ো থেকে উদ্ধার নিখোঁজ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের দেহ। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির আর এক সদস্যকে। জলপাইগুড়ির মেটেলি ব্লকের ইংডং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন জগৎ পাল বড়াইক। দিন তিনেক আগে বিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পর থেকে আর খোঁজ ছিল না তাঁর। রবিবার উদ্ধার হল তাঁর দেহ। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে মেটেলি থানায়। আটক তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। মেটেলি থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান ও পথ অবরোধ করেন গ্রামবাসীদের। ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।
গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে খুন? নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য? কারণ খুঁজতে তদন্তে নামানো হয়েছে স্নিফার কুকুর। পঞ্চায়েত সদস্য জগৎপাল বারাইক ছিলেন নাগেশ্বরী চা বাগানের বাসিন্দা।
গত বৃহস্পতিবার রাতে কয়েক জন বন্ধু ও স্ত্রীকে নিয়ে এক বিয়ে বাড়িতে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যান জগৎ পাল বরাইক। পরে স্ত্রী’কে বলেন বাড়ি চলে যেতে। তিনি পরে ফিরবেন বলে জানিয়েছিলেন। এরপর রাতে বন্ধুরা বাড়ি ফিরে এলেও ওই পঞ্চায়েত সদস্য ফেরেননি। কোথাও খুঁজে না পেয়ে স্ত্রী সুনীতা বরাইকের সন্দেহ হয়।
শুক্রবার মেটেলি থানার দ্বারস্থ হন তিনি। পুলিশ তদন্তে নেমে সুভাষ বরাইক (বিট্টু) ও পবন বরাইক নামের দুজনকে গ্রেফতার করে। সুভাষ বরাইক আবার মেটেলি পঞ্চায়েত সমিতিরই সদস্য। শনিবার নিখোঁজ পঞ্চায়েত সদস্যের খুঁজে বের করার দাবিতে মেটেলি থানা ঘেরাও করেন আত্মীয় এবং গ্রামবাসীরা।
পরে পুলিশ গ্রেফতার করে দুজনকে আদালতে তোলে। এরপর রিমান্ডে নিয়ে তদন্ত শুরু করে এবং আরও দুজনকে গ্রেফতার করে। রবিবার পঞ্চায়েত সদস্যের খোঁজে আনা হয় স্নিফার ডগ।
রবিবার নাগেশ্বরী চা বাগানের একটি মাটির কুয়ো থেকে জল তুলতে গিয়ে এক যুবতী কুয়োর মধ্যে একটি দেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ও দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
এরপরই ওই চা বাগানের বাসিন্দারা থানায় এসে বিক্ষোভ দেখান। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। দীর্ঘক্ষণ চলে বিক্ষোভ,পরে পুলিশি আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
মেটেলি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি জোশেফ মুন্ডা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘তিন দিন বাদে একজন সক্রিয় কর্মীর দেহ উদ্ধার হল। এটা পরিকল্পনা মাফিক ঘটনা। ওরা দেহ গায়েব করার চেষ্টায় ছিল। সবাই চাইছে দোষীদের কঠোর শাস্তি হোক।’
মালবাজারের এসডিপিও রবীন থাপা জানিয়েছেন, পঞ্চায়েত সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।