জলপাইগুড়ি: এতদিন পুরসভায় কাজ করেছেন। সঙ্গে আবার ছেলে, বউকে অবসরপ্রাপ্ত কর্মী হিসাবে খাতায় কলমে দেখিয়ে বছরের পর বছর পেনশনেরও ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। জলপাইগুড়ি পুরসভার এক কর্মীর বিরুদ্ধে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে থানায় অভিযোগ দায়ের করল পুর কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৮১ লক্ষ টাকা তছরূপের অভিযোগ রয়েছে অরিঞ্জিত ঘোষ ওরফে টিঙ্কুর বিরুদ্ধে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, অরিঞ্জিত ঘোষ জলপাইগুড়ি পুরসভার পেনশন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়টি দেখাশোনা করতেন। সম্প্রতি তিনি অবসর নেন। এরপরই পেনশন সংক্রান্ত বিল তৈরি করতে গিয়ে দেখা যায় গত কয়েক বছরের তুলনায় এখন পেনশনের টাকা অনেকটাই কম খরচ হচ্ছে। এরপরই বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুরসভা কর্তৃপক্ষ। তাতেই চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয়। ১১ জনের বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত পলাতক।
শনিবার দুপুরে কোতোয়ালি থানায় উপস্থিত হন পুরসভার চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল এবং ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তাঁরাই হিসাবনিকাশ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মী, তাঁর স্ত্রী ও পুত্র-সহ মোট ১১ জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মূলত, এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত চলছিল। তার রিপোর্ট জমা পড়তেই পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়।
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “যে কোনও সরকারি অফিস চলে বিশ্বাসযোগ্যতার উপর ভিত্তি করে। অরিঞ্জিত ঘোষ মূল অভিযুক্ত। আমরা এখনও অবধি যতটা তদন্ত করতে পেরেছি তাতে ৮১ লক্ষ টাকার তছরূপ হয়েছে। যে লোক কোনওদিন পুরসভায় চাকরিই করেননি তাঁদের নামে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে পেনশন দিয়েছেন তিনি। সেখান থেকে বড় অংশের টাকা তিনি নিয়ে নিয়েছেন।” বিভাগীয় তদন্তের পর এই এফআইআর করা হল বলে জানান তিনি। এদিকে অভিযোগ সামনে আসতেই বাড়িতে তালা দিয়ে গা ঢাকা দিয়েছেন মূল অভিযুক্ত। তাঁর কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বাকিদেরও কোনও বক্তব্য এখনও মেলেনি।
আরও পড়ুন: Fraud Case: সরকারি চাকরির নামে টাকা আত্মসাৎ, তৃণমূল বিধায়কের আপ্ত সহায়ক গ্রেফতার