জলপাইগুড়ি: আবাস যোজনায় (PMAY) যোগ্যরা বঞ্চিত হলে আধিকারিকদের গাছে বাঁধার হুমকি দিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি। পুলিশের ক্ষমতা থাকলে যেন আটকে দেখায়, বলেও হুঁশিয়ারি দেন জলপাইগুড়ির বিজেপি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী। সোমবার রাজগঞ্জে বিজেপির একটি বিক্ষোভ জমায়েত ছিল। সেখান থেকেই এই কথা বলেন ওই বিজেপি নেতা। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ভূরি ভূরি দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে এ রাজ্যে। সবথেকে বেশি যে অভিযোগ, যোগ্যরা তালিকায় ঠাঁই পাননি। অথচ নাম রয়েছে পাকা বাড়ির মালিকেরও। অভিযোগ, শাসকদল স্বজনপোষণ করেছে বাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে পঞ্চায়েত প্রধান বা পঞ্চায়েত সদস্যর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। দক্ষিণবঙ্গ, উত্তরবঙ্গ সর্বত্রই একই ছবি। আর এই অভিযোগকে ইস্যু করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মাটি শক্ত করতে মরিয়া বিজেপি। বাংলার জেলায় জেলায় ব্লক অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছে তারা। ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়িতে এই কর্মসূচি শুরু হয়ে গিয়েছে।
আবাস যোজনার তালিকায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সোমবার রাজগঞ্জের বিডিও অফিস ঘেরাও করে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, যোগ্যদের বাদ দিয়ে তালিকায় শাসকদলের লোকেরা জায়গা পেয়েছে। অভিযোগ, অথচ যাঁরা প্রকৃতই এই বাড়ির দাবিদার, তাঁদের কাটমানি দিয়েও বাড়ি মেলেনি। এই অভিযোগকে সামনে রেখেই রাজগঞ্জ বিডিও অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। স্মারকলিপিও জমা দেয় বিডিওকে।
বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামীর বক্তব্য, “সরকারের দালালি করছেন এক শ্রেণির আধিকারিকরা। গরিব মানুষকে বঞ্চিত করে তৃণমূলের লোকজন, পয়সাওয়ালা লোকজন ঘর পাচ্ছেন। সারা জলপাইগুড়ি জেলায় অনেক অঞ্চল অফিসে আমরা তালা মেরে দিয়েছি। বিক্ষোভ দেখিয়েছি। বিডিও অফিসে আমাদের বিক্ষোভ চলছে। রাজগঞ্জ বিধানসভা এলাকাতেও বিক্ষোভ দেখানো হল। তবে এটা কিন্তু ট্রেলার। যদি বিডিও, সরকারি আধিকারিকরা এর সঠিক বিচার না করেন, গরীব মানুষ যদি ঘর না পান, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ওই আধিকারিক-সহ তৃণমূল নেতাদের গাছে বাঁধা হবে আগামিদিনে। বিডিও অফিসে তালা মারব। পুলিশের হিম্মত থাকে যদি আমাদের যেন আটকায়। যদি সঠিক পথে না আসে, আমরা আঙুল বাঁকিয়ে হলেও ঘি তুলব।”
আর বিজেপি নেতার এই মন্তব্য প্রসঙ্গে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাপী গোস্বামীর কথা আর হুতম পেঁচার নকশা, দুটোই এক। বিজেপি আর কোনওদিনই তৃণমূলকে রুখতে পারবে না। কারণ, গত বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে একের পর এক হার। ওরা কোমায় চলে গিয়েছে। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ওদের মৃত্যু ঘটবে।”