Jalpaiguri News: গরীব টোটো চালককে তৃণমূল শ্রমিক নেতার নিদান; মানতে না পেরে আত্মহত্যা, দাবি স্ত্রীর
Jalpaiguri: জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই টোটো চালক। স্থানীয় এক মহিলার কাছ থেকে টোটো ভাড়া নেন তিনি।
জলপাইগুড়ি: সালিশি সভায় নিদান দিয়েছিলেন তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা। অভিযোগ, তা মানতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন এক টোটো চালক। জলপাইগুড়ির এই ঘটনা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এক বিধবা মহিলার কাছ থেকে টোটো ভাড়া নিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন প্রৌঢ়। গাড়ি ভাড়া দিয়ে মহিলাও কিছু আয়ের মুখ দেখছিলেন। গত বছর দুর্গাপুজোর সময় সেই টোটো চুরি হয়ে যায়। টোটোর মালকিন বিষয়টি এলাকার তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির (INTTUC) নেতাকে জানান। সম্প্রতি সালিশি সভা ডাকা হয়। ওই টোটো চালকও সেখানে যান। অভিযোগ, সেখানে নিদান দেওয়া হয় মালকিনকে প্রতি মাসে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪ হাজার টাকা করে দিতে হবে ওই টোটো চালকের। ১১ মাসে কিস্তি শোধ করতে হবে। অভিযোগ, এই চাপ সহ্য করতে না পেরেই নিজেকে শেষ করে দেন টোটো চালক।
জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই টোটো চালক। স্থানীয় এক মহিলার কাছ থেকে টোটো ভাড়া নেন তিনি। দৈনিক কিস্তির ভিত্তিতে টাকা দিতেন। এদিকে গত বছর দুর্গাপুজোর সময় সেই টোটো চুরি হয়ে যাওয়ায় উপার্জনহীন হয়ে পড়েন বিধবা মহিলাও। এরপরই তিনি তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা পুণ্যব্রত মিত্রের কাছে বিষয়টি জানান।
অভিযোগ, সোমবার রাতে উভয়পক্ষকেই ডাকা হয় স্থানীয় মাসকলাইবাড়ি তৃণমূল কার্যালয়ে। পুণ্যব্রত মিত্র একটি সালিশি সভা ডাকেন বলে দাবি নিহতের পরিবারের। সেখানেই বলা হয়, প্রত্যেক মাসে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪ হাজার টাকা করে দিতে হবে ওই টোটো চালককে। নিহতের স্ত্রী জানান, বাড়িতে ফিরে মনমরা হয়ে বসেছিলেন স্বামী। স্ত্রীকে সমস্তটা জানান। কীভাবে টাকা পরিশোধ করবেন তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন। রাতের খাবারও খাননি। না খেয়েই শুয়ে পড়েন। পরিবারের দাবি, মঙ্গলবার সকালে ওই টোটো চালকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।
নিহতের স্ত্রীর দাবি, স্বামী টোটো চালিয়ে যা পেতেন তাতেই সংসার চলত। এর মধ্যে আবার ব্যাঙ্কেও কিস্তির টাকা দিতে হয় প্রতি সপ্তাহে। সঙ্গে প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা দেওয়ার চাপ নিতে পারেননি। টোটো চালকের স্ত্রীর কথায়, ১১ মাসে ৪ হাজার টাকা কীভাবে দেবে, তা ভেবেই মনমরা হয়ে পড়েন তাঁর স্বামী। আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বলেও অভিযোগ স্ত্রীর।
যদিও তৃণমূলের শ্রমিক নেতা পুণ্যব্রত মিত্র বলেন, “আমাদের ইউনিয়নেরই টোটো চালক ছিল ও। যার টোটো চালাত তিনি একজন বিধবা মহিলা। এই আয় থেকেই তাঁর অন্নসংস্থান হয়। টোটো চালকেরও পরিবার রয়েছে। তাই একটা সালিশি সভা ডাকা হয়। আমাকে সেখানে যেতে বলেছিল দু’পক্ষই। আমরা কারও উপর কোনও চাপ দিতে চাইনি। চেয়েছিলাম দু’টো পরিবারই যেন বাঁচে। নির্দিষ্টভাবে লেখাপড়াও কিছু হয়নি। যে চলে গেল সেও আমাদের সংগঠনের। অসুবিধা থাকলে বলতে পারত, কিন্তু সেরকম কোনও কথাই বলেনি। যদি সে দিতে না পারত তাহলে আমাদের জানালে আমরা নিশ্চয়ই অন্য ব্যবস্থা করতাম। একজন ইউনিয়নের সদস্যকে হারালাম এটা মানতে পারছি না।” পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানান, “সালিশি সভা বেআইনি। তবে আমাদের কাছে এখনও কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে বিষয়টি খতিয়ে দেখব।”
আরও পড়ুন: CPIM party congress: নতুন মুখেই কি ভরসা, কান্নুরে পার্টি কংগ্রেসেই উত্তরের খোঁজ সিপিএমের