ঝাড়গ্রাম: ২০১১ সালের আগে আতঙ্কের আরেক নাম ছিল বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোড় ও ময়ুরঝর্ণার জঙ্গল। মাওবাদীদের সেই শক্তি ঘাঁটিতে লাগাতার সন্ত্রাসে ঘুম উড়েছিল সাধারণ মানুষের। যদিও রাজ্যে পালাবদলের পর ছবিটা অনেকটা বদলেছে। কিন্তু, দীর্ঘ ১৩ বছর পর ফের ওই জঙ্গলে ফিরল চেনা আতঙ্কের ছবি। তবে এবার মাওবাদী আতঙ্ক নয়, এবার আতঙ্কের নাম জিনাত।
২০১১ সালের আগের কথা। রাতে তো বটেই দিনের বেলাতেও শুনশান থাকত বেলপাহাড়ির চাকাডোবা থেকে ময়ুরঝর্ণা হয়ে ঘাটশিলা যাওয়ার জঙ্গলপথ। ভয়ে জঙ্গলের ধার মাড়াতেন না সাধারণ মানুষ। অন্ধকার নামলেই কখনও মাওবাদীদের গুলির শব্দ, আবার কখনও যৌথ বাহিনীর বুটের শব্দে ভারী হয়ে উঠত কাঁকড়াঝোড় আর ময়ুরঝর্ণা জঙ্গলের বাতাস। প্রকাশ্য দিবালোকেও ঘটে যেত রক্তারক্তি কাণ্ড।
মাওবাদীদের ডাকা লাগাতার বনধ, অবরোধ আর সন্ত্রাসের আবহে পর্যটকদেরও সাহস ছিল না অরণ্যসুন্দরি ঝাড়গ্রামের ওই পথ মাড়ানোর। কিন্তু, ২০১১ সালের পর সেই ছবিই বদলে যায়। শান্তি ফেরে বেলপাহাড়ির জঙ্গলগুলিতে। ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার পাশাপাশি এলাকায় বাড়তে থাকে পর্যটকের সংখ্যা। কিন্তু, ১৩ বছর আগের সেই আতঙ্কের ছবি আবার ফিরে এসেছে কাঁকড়াঝোড় ও ময়ুরঝর্ণার জঙ্গলে। তবে এবার আর মাওবাদীদের আতঙ্কে নয়, এবার আতঙ্কের নাম জিনাত।
ওড়িশার সিমলিপাল থেকে চলে আসা এই বাঘিনীর আতঙ্কে এখন ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছে গোটা এলাকা। জঙ্গলপথ এড়ানোর জন্য পর্যটক থেকে সাধারণ মানুষকে পরামর্শ দিয়ে মাইক প্রচার চালাচ্ছে বন দফতর। জঙ্গলের রাস্তাঘাট কার্যত শুনশান। পর্যটকেরাও জঙ্গলে বেড়ানোর পরিকল্পনা বাতিল করে ফিরে যাচ্ছেন নিজের নিজের ঠিকানায়। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত কতক্ষণে বন্দী করা যায় জিনাতকে।