মালদা: ইউক্রেন ছাড়তে গিয়ে বারবার বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে ভারতীয় পড়ুয়াদের। তেমনই অভিজ্ঞতার কথা শোনা গেল নুর হাসানের থেকে। সে দেশে ডাক্তারি পড়তে গিয়েছিলেন নুর। তাঁর অভিযোগ পড়ুয়াদের মারধর করছে ইউক্রেন সেনা। কিন্তু কেন? কী কারণে ভারতীয় ছাত্রদের গায়ে হাত তুলছেন তাঁরা? পাশাপাশি ওই পড়ুয়া জানালেন, উদ্ধারকাজ চলছেও এক পেশে ভাবে। আগে ইউক্রেনিয়দের সাহায্য করা হচ্ছে। বাসে-ট্রেনে আগে নাকি ওদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উল্টে কোনও পড়ুয়া যদি আগে পরিবহনে উঠেছে তাকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। তীব্র গোলা বর্ষণের সময় টানা তিনদিন বাঙ্কারে ছিলেন নুর হাসান। খাওয়ার-জল কিছুই নেই। এমনকী শৌচকর্মের ব্যবস্থাও নেই। ইউক্রেনের সাহায্য না পেয়ে বাধ্য হয়ে নিজেরাই বাসের ব্যবস্থা করে রওনা দেয়। পরে রোমানিয়া বিমানবন্দরে এসে ভারতীয় দূতাবাসের সাহায্যে পৌঁছায় দিল্লি। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্যে কলকাতা। অবশেষে গৌড় এক্সপ্রেসে মালদায় কালিয়াচকে নিজের বাড়ি পৌঁছেছে নুর হাসান।
মালদার কালিয়াচকের বাসিন্দা নুর। বলেন, “আমরা প্রায় পঞ্চাশজন ছাত্র ছিলাম। কোনও উপায় না পেয়ে একটি বাস ভাড়া করি। তারপর বাসে করে রোমানিয়া বর্ডারের জন্য পাড়ি দিই। ইউক্রেন সেনা আমাদের মারধর করেছে। শুধু তাই নয়, আকাশে গুলি চালিয়ে ভয় দেখানোরও চেষ্টা করেছে। রোমানিয়া বর্ডারে পৌঁছানোর জন্য কেউ আমাদের সাহায্য করেনি। আমরা নিজেদের উদ্যোগে পৌঁছাই। সেখানেই ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকরা ছিলেন। তারপর ওরাই আমাদের উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসে।”
বস্তুত ইউক্রেন সেনাদের অত্যাচারের কথা একা নুর নয়, আলিপুরদুয়ারের আরও এক ছাত্রও জানান। গৌরব জানান, “বাড়িতে এসে স্বস্তি লাগছে। বাকি যারা ফিরে এসেছে তাদেরও ভালো লাগছে। এখনও অনেক পড়ুয়া ওইখানে আটকে রয়েছে। যতদূর খবর ভারতের প্রায় পাঁচহাজারের মত পড়ুয়া ইউক্রেনে আটকে রয়েছে। ইউক্রেন সরকার আমাদের ফিরে আসার জন্য কোনও রকম সাহায্য করছে না। ওরা প্রথমে নিজেদের দেশের পডুয়াদের পাশে দাঁড়াচ্ছে। ওইখানে প্রচুর নাইজেরিয়ান ও ভারতের পড়ুয়া রয়েছে। নাইজেরিয়া দূতাবাসের অনেক সদস্য ইউক্রেনে রয়েছে। তাই ওরা বের হতে পারলেও আমাদের দূতাবাসের তেমন কোনও সদস্য না থাকায় আমরা বের হতে পারছি না। তবে সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব। বারংবার আমাদের পাশে থাকার জন্য। আমাদের ফিরিয়ে আনার জন্য। আমরা যখন দিল্লি পৌঁছই সরকারি তরফের বহু আধিকারিক একাধিকবার আমায় ফোন করে খোঁজ খবর জানতে চেয়েছিল।”