মালদা : অপহরণ করা হয়েছে তৃণমূল কর্মীকে। আর অভিযোগও তৃণমূলেরই বিরুদ্ধে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের জেরেই অপহৃত হয়েছেন ওই তৃণমূল কর্মী। ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার হরিশচন্দ্রপুর ২ ব্লকের মালিওর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কাতলামারি গ্রামে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। অপহৃত ওই ব্যক্তির নাম আব্দুল বারিক। এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবেই পরিচিত তিনি। তাঁর খোঁজে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু করে দিয়েছে হরিশচন্দ্রপুর থানার পুলিশ। উল্লেখ্য, কাতলামারি গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব নতুন নয়। আব্দুল বাসির ও উনসা হক – এই তৃণমূল নেতার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব লেগেই রয়েছে। প্রায় ছয় মাস আগে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে প্রকাশ্যে গুলির লড়াইও হয়। যার জেরে রক্তাক্ত হয়েছিল দুই গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ল রাজ্যের শাসক দলের ওই দুই গোষ্ঠী।
অপহৃত আব্দুল বারিক এলাকায় উনসা হক গোষ্ঠীর অনুগত বলে পরিচিত। অভিযোগ, আব্দুল বারিককে রাতের অন্ধকারে মুখে কাপড় গুজে অপহরণ করেছে আব্দুল বাসিরের গোষ্ঠী। অপহৃত আব্দুল বারিকের স্ত্রী সায়েমা বিবি আব্দুল বাসির সহ তাঁর গোষ্ঠীর ১৫ জনের নামে হরিশচন্দ্রপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। এদিকে ওই অপহরণের ঘটনার পর থেকেই আব্দুল বাসির গোষ্ঠীর দলবল বাড়িতে তালা ঝুলিয়ে উধাও। অপহৃত আব্দুল বারিকের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। তবে এই ঘটনায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।
অপহৃত আব্দুল বারিকের স্ত্রী সায়েমা বিবি জানিয়েছেন, “রাত সাড়ে ১০ টা – ১১ টা নাগাদ আমার স্বামীর মোবাইলে ফোন আসে। ফোন আসার কিছুক্ষণ পর বাড়িতে এসে গেটে ধাক্কাধাক্কি করছিল কয়েকজন। বলছে, আমরা সরকারের লোক আছি, গেট খোল। আমি গেটের বাইরে বেরিয়ে দেখি বাসির, বাসিরের ছেলে রফিকুল এবং সফিকুল, দুলাল সহ অন্যান্যরা রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫-১৬ জন আমার চোখে পড়েছে। এছাড়া গলির মুখে আরও কয়েকজন ছিল। ওরা আমার স্বামীর মুখে গামছা বেঁধে নিয়ে গেল। আমাকেও লাথি, ঘুষি মারে এবং আমি অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিলাম।” অপহৃতের ভাই শীষ মহম্মদ জানিয়েছেন, “ওদের নেতা-মাথা বেশি, আমাদের নেতা-মাথা কম। তাই আমাদের সঙ্গে এমন হয়েছে।”
এই বিষয়ে মালদা জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসু জানিয়েছেন, “এটা তাঁদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব। দলের কোনও সম্পর্ক নেই। তবুও এই বিষয় নিয়ে দল খতিয়ে দেখবে। জানানো হয়েছে জেলা সভাপতিকেও। পাশাপাশি পুলিশ যা করার করছে। আইন আইনের পথে চলবে।”