মালদা: জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের দুইভাইয়ের বিবাদ। সেই বিবাদের বলি বছর পঁয়ত্রিশের যুবক। কোদাল দিয়ে নিজের ভাইপোকে কুপিয়ে মারার (Murder) অভিযোগ ওঠে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠতেই রাতে প্রহরায় বসে পুলিশ। কিন্তু, সকালে দেখা যায় অভিযুক্তের বাড়ি আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ পুলিশই অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি রতুয়ার ১ নম্বর ব্লকের চাঁদমণি গ্রাম পঞ্চায়েতের গোরক্ষা গ্রামের।
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, মৃত শফিকুল ও তাঁর জেঠু ইসলামদের দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিবাদ। পাশাপাশি বাড়িতে থেকেও বিবাদ মেটেনি। শনিবার সকালে একটি গাছের ডাল কাটাকে কেন্দ্র করে বিপদের সূত্রপাত। যা ধীরে ধীরে জমি বিবাদ অবধি গড়ায়। পর্যায়ক্রমে শুরু হয় হাতাহাতি। অভিযোগ, এরপরেই ইসলাম নিজের ভাইপোর মাথায় কাছেই ফেলে রাখা কোদাল দিয়ে আঘাত করে। ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে। ঘটনাস্থলেই শফিকুলের মৃত্যু হয়। এরপর এলাকাবাসী ছুটে আসে। উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু চিকিত্সকেরা শফিকুলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তারপরেও শান্ত হয়নি পরিবেশ। রাতে পুলিশ এলাকা টহল দিতে শাুরু করে। সকল গ্রামবাসীকে কার্যত ঘটনাস্থল থেকে বের করে দেওয়া হয়। সারারাত প্রহরায় থাকে পুলিশ। ইতিমধ্যেই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান অভিযুক্ত ইসলাম ও তাঁর পরিবার। এরপর সকালে আচমকা দেখা যায় অভিযুক্ত ইসলামের বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশই ইচ্ছে করে আগুন ধরিয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা মুর্শিদ আলির কথায়, “আমরা দেখেছি ওদের দুই বাড়িতে ঝামেলা। রক্তারক্তি কাণ্ড। তারপর পুলিশ এসে আমাদের সকলকে সরিয়ে দেয়। ওদের বাড়ির আশেপাশে কেউ থাকতে পারেনি। তারপরেও কী করে আগুন লাগল তা আমরা জানি না। তারমানে এটাই দাঁড়ায় পুলিশ আগুন লাগিয়েছে। শফিকুল ভাল ছেলে ছিল। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই। আর কেন ওদের বাড়িতে আগুন ধরাল পুলিশ তাও জানতে চাই।”
অন্য এক বাসিন্দা আনোয়ারের বলেন, “আমি কাল দুপুরে আচমকা চিত্কার শুনতে পাই। এসে দেখি সেই জমি নিয়ে ঝামেলা। ইসলাম আর শফিকুলদের এই ঝামেলা অনেকদিনের। কিছুদিন আগেও সালিশি সভা বসেছিল। ওদের তখনকার মতো বুঝিয়েসুঝিয়ে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু ঝামেলা মেটেনি। তারপরেই কালকের ঝামেলা।”
আনোয়ার আরও বলেন, “কালকে শফিকুলের বউ-মা-বাবা সবাই ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে। ওদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। আচমকা ইসলাম পাশে পড়ে থাকা কোদাল তুলে হামলা চালায়। শফিকুলের মাথায় লাগে। ওকে কোনওরকমে হাসপাতালে নিয়ে যাই। ততক্ষণে অবশ্য সব শেষ। ইসলামরাও সবাই পালিয়ে গিয়েছে। জমি নিয়ে ঝামেলা থেকে এই কাণ্ড। তবে কারা বাড়িতে আগুন লাগিয়েছে আমরা জানি না।”
রতুয়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ করা হচ্ছে। তবে, অভিযুুক্ত ইসলামের বাড়িতে কে আগুন লাগাল সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চায়নি পুলিশ।
আরও পড়ুন: Crime: ‘আমাদেরই সমর্থক ছিলেন’, তেহট্টে ধর্ষণ-কাণ্ডে আদিবাসী মহিলার বাড়িতে বিজেপি কর্মীরা
আরও পড়ুন: CM Mamata Banerjee: বাতিল জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক, আকাশপথেই বন্যা কবলিত বাঁকুড়া দর্শন মুখ্যমন্ত্রীর