Malda: চুরির অপবাদে শিক্ষককে বেধড়ক মার, তৃণমূল কাউন্সিলর লেলিয়ে দিলেন পোষা কুকুর!
Teacher attacked: "আমাকে হঠাৎই তিন নম্বরের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারধর করেন। আমি জানাই আমি একজন স্কুল টিচার। আমার কাছে চারচাকা গাড়ি আছে। আমি চাবি দেখালাম। সব চাবি, মোবাইল কেড়ে নিল। তার পর বলল শিক্ষক কি চুরি করতে পারে না? এসব বলতে বলতে নিজের পোষা কুকুর আমার গায়ে লেলিয়ে দিল!''
মালদহ: “আমি একজন শিক্ষক। আমি কেন চুরি করব? এই দেখুন, আমার নিজের গাড়ির চাবি রয়েছে আমার সঙ্গে…” কে শোনে কার কথা। সাইকেল চুরির অভিযোগ এনে স্কুল শিক্ষককে বেধড়ক মারধর করলেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, গোটা ঘটনা ঘটে স্থানীয় তৃণমূল (TMC) কাউন্সিলরের উপস্থিতিতে। এবং তাঁর পোষা কুকুরকে লেলিয়ে দেওয়া হয় শিক্ষকের ওপর! ন্যক্কারজনক এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের (Malda) ইংরেজবাজার এলাকায়।
জানা গিয়েছে, স্কুল শিক্ষককে চোর অপবাদ দিয়ে প্রথমে শুরু হয় গণপ্রহার। শুধু তাই নয়। তারপর তৃণমূল কাউন্সিলরের পোষা কুকুর ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁর গায়ে। সেই কুকুরের কামড়ে ক্ষত বিক্ষত হন শিক্ষক! অভিযোগ তৃণমূলের কাউন্সিলর পরিতোষ চৌধুরীর নির্দেশেই এই কাণ্ড হয়েছে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে ইংরেজবাজার পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মালঞ্চপল্লী এলাকায়। গাজোলের বাসিন্দা আক্রান্ত ওই শিক্ষকের নাম সুদীপ টুডু। তিনি হবিবপুরের মানিকোড়া হাইস্কুলের ফিজিক্যাল এডুকেশনের শিক্ষক।
ঠিক কী ঘটেছে?
মালদহের জেলা ক্রীড়াক্ষেত্রে খুবই পরিচিত নাম সুদীপ টুডু। তাঁর একটা পরিচয় তিনি পেশায় শিক্ষক। তাঁর এক আত্মীয় মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁকে দেখতে তিনি হাসপাতালে যান। তার পর নিজের গাড়ি চালিয়ে মালঞ্চপল্লীতে নিজের বাড়ি যান। অভিযোগ, ওই তিন নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পরিতোষ চৌধুরী ও তাঁর সঙ্গী সাথীরা তাঁকে সাইকেল চুরির অপবাদ দিয়ে ঘিরে ধরেন। প্রথমে স্বাভাবিকভাবেই অবাক হয়ে যান ওই শিক্ষক। এর পর তাঁকে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলে অভিযোগ। তিনি নিজের গাড়ির চাবি দেখিয়ে জানান, তাঁর সঙ্গে নিজের গাড়ি আছে। আর তিনি একজন শিক্ষক। খামোখা তিনি কেন সাইকেল চুরি করতে যাবেন? এই কথা শুনে কাউন্সিলরকে নাকি বলতে শোনা যায় সঙ্গীসাথীদের, ‘শিক্ষকরা কি চুরি করে না?’
এর পর শিক্ষককে চূড়ান্ত হেনস্থা, মারধর করার পর তাঁর গায়ে কাউন্সিলরের পোষা কুকুরকে লেলিয়ে দেওয়া হয়। সেই কুকুরের কামড়ে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় শিক্ষকের দেহ। দীর্ঘ রাস্তা তাঁকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর পর স্থানীয়দের কয়েকজন ওই শিক্ষককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। এদিন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করেছেন সুদীপবাবু। কপালে, গায়ে স্টিচ নিয়ে শিক্ষক বলেন, “আমাকে হঠাৎই তিন নম্বরের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মারধর করেন। আমি জানাই আমি একজন স্কুল টিচার। আমার কাছে চারচাকা গাড়ি আছে। আমি চাবি দেখালাম। সব চাবি, মোবাইল কেড়ে নিল। তার পর বলল শিক্ষক কি চুরি করতে পারে না? এসব বলতে বলতে নিজের পোষা কুকুর আমার গায়ে লেলিয়ে দিল!” বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এদিকে পুরো ঘটনায় অভিযুক্ত কাউন্সিলর-এর প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: BJP: ভাড়া নিয়ে বিবাদ, বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে তালা দিলেন দলের ‘বেসুরো’ বিধায়ক!