মালদা: গঙ্গাভাঙনের জেরে স্কুল বেদখল। স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন দুর্গতরা। স্কুলে খোলা হয়েছে মুদি দোকানও। বিকোচ্ছে পান-বিড়ি-সিগারেটও। ফলে স্কুল খুললেও যেতে পারছেন না পড়ুয়ারা। ঢুকতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। মালদার কালিয়াচকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে তারা। অবরোধ করা হয় ৩২ নম্বর জাতীয় সড়ক। স্কুলের মধ্যে মুদি দোকান খোলার অনুমতি পেল কীভাবে? সেটা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
মালদার ৩ নম্বর ব্লকের চামাগ্রাম হাইস্কুল। এখন অবশ্য দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি কি আদৌ স্কুল না শরণার্থীদের শিবির? এখানে এখন হাজারও উদ্বাস্তুদের ভিড়। তাঁদের বাসস্থান এখন এটাই। গঙ্গার বুকে চলে গিয়েছে সর্বস্ব। তারপর শেষ সম্বলটা নিয়ে বছর দুয়েক আগে তাঁরা আশ্রয় নিয়েছিলেন এই স্কুলবাড়িতে। সেটাই এখন ওঁদের ‘বাড়ি’। জামাকাপড় কাচা-মেলা, রান্নাবান্না, খাওয়া-সবই হচ্ছে। সঙ্গে অনেকে রুজিরুটির ব্যবস্থাও করে ফেলেছেন স্কুলবাড়িকে ঘিরে। স্কুলপ্রাঙ্গনে খুলে বসেছেন মুদি দোকান। সেখানে দেদার বিকোচ্ছে পান মশলা থেকে শুরু করে সিগারেট বিড়িও।
স্কুল ‘বেদখল’। কারণ এই স্কুল এখন বীরনগর এলাকার গঙ্গা ভাঙনে উদবাস্তুদের দখলে। শতাধিক পরিবার এই স্কুলে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। এখন এঁদের না সরানো পর্যন্ত খোলা যাচ্ছে না স্কুল।এই নিয়ে মুখ খোলেন নি বিডিও বা প্রশাসনিক আধিকারিকরা। টানা দুবছর পরে স্কুল খুললেও যেতে পারছে না ছাত্র ছাত্রীরা। বাধ্য হয়ে স্কুল ইউনিফর্ম পরে বই খাতা নিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ ছাত্র ছাত্রীদের। মালদার ১৮ মাইল এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তারা।
দুবছর কারোর মাথাব্যথা হয়নি এতে। অনলাইনে ক্লাস করেছে ছাত্রীরা। কিন্তু দুবছর পর এবার স্কুল খুলেছে। সবাই স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু নিজেদের স্কুলে ঢুকতেই পারছে না চামাগ্রাম হাইস্কুলের পড়ুয়ারা। স্কুলবাড়ি যে এখন তাঁদের বেদখল!
বিক্ষোভকারী এক ছাত্রীর বক্তব্য, “অবাক কাণ্ড, স্কুলে চলছে দোকান। কীভাবে ক্লাস হবে। কারোর কোনও মাথাব্যথা নেই। কীভাবে আমরা ক্লাস করব? কেন আমাদের স্কুল এভাবে বেদখল হয়ে যাবে?” এই স্কুল এখন বীরনগর এলাকার গঙ্গা ভাঙনে উদ্বাস্তুদের দখলে। শতাধিক পরিবার এই স্কুলে দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। এখন এঁদের না সরানো পর্যন্ত খোলা যাচ্ছে না স্কুল। এই নিয়ে মুখ খোলেননি বিডিও বা প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
দুর্গতদের বক্তব্য, “আমরা এখন যাব কোথায়? আমাদের তো বাড়িঘর বেরিয়ে গিয়েছে। আমাদের একটা ব্যবস্থা করে দিক, আমরা চলে যাব।” বিষয়টি এখন শিক্ষা দফতরের কাছেও জানানো হয়েছে। তবে এখনও কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।