নোবেলজয়ীকে ‘জমিচোর’! দিলীপের মন্তব্যে অধীরের কটাক্ষ ‘শিক্ষাকে কোথায় এনে দাঁড় করাচ্ছে বিজেপি?

শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী | Edited By: সোমনাথ মিত্র

Dec 31, 2020 | 5:54 PM

"বাঙালি কবে মানুষ হবে? সারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরস্কার জয় করে বাঙালিকে যিনি বিশ্ব দরবারে নতুন করে পরিচিত করলেন, গর্বিত করলেন, তাঁকেই বাংলার মাটি থেকে 'জমিচোর' আখ্যা পেতে হয়!"

নোবেলজয়ীকে জমিচোর! দিলীপের মন্তব্যে অধীরের কটাক্ষ শিক্ষাকে কোথায় এনে দাঁড় করাচ্ছে বিজেপি?
অলঙ্করণ- অভীক দেবনাথ

Follow Us

মুর্শিদাবাদ: এ যেন নিজেদের কবর নিজেরাই খুঁড়লেন দিলীপ ঘোষরা! আপাতত ‘জমি চোর’ অস্ত্রেই পাল্টা বিদ্ধ হচ্ছে বিজেপি। তীব্র নিন্দায় সরব রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে বিদ্বজনেরা। এ কী বললেন বিজেপির বঙ্গ সভাপতি! এ তো বাঙালির অপমান!  শিক্ষার মানদণ্ডকে কোথায় এনে দাঁড় করাল বিজেপি? বাম, তৃণমূলের পর এবার প্রশ্ন তুললেন অধীর চৌধুরী।

‘অমর্ত্য সেন জমিচোর!’ নোবেলজয়ী সম্পর্কে দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যকেই পুনরাবৃত্তি করার সময় অত্যন্ত বিস্ময় ধরা পড়ল অধীর চৌধুরীর গলায়, চোখেমুখে। বললেন, “বাঙালি কবে মানুষ হবে? সারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পুরস্কার জয় করে বাঙালিকে যিনি বিশ্ব দরবারে নতুন করে পরিচিত করলেন, গর্বিত করলেন, তাঁকেই বাংলার মাটি থেকে ‘জমিচোর’ আখ্যা পেতে হয়!” তাঁর গলায় ফের বিস্ময়, ‘অবাক লাগছে বড্ড!’

প্রসঙ্গত, শেষ কয়েকদিনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের বোলপুরের বাড়ি ‘প্রতীচী’র জমি বিতর্কে একাধিক মন্তব্য করছেন বিজেপি নেতারা, যা শালীনতার সীমা ছাড়িয়েছে বলে দাবি বিদ্বজনেদের। তবে এই প্রথম নয়, অমর্ত্য সেনকে এর আগেও একাধিকবার বিজেপির তীক্ষ্ণ মন্তব্যের শিকার হতে হয়েছে। আর এর কারণ হিসাবে অনেকেই বলছেন, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আর মুক্ত চিন্তার পক্ষে সওয়াল করাতেই নাকি বিজেপির রক্তচক্ষু অমর্ত্য সেনের ওপর। তবুও প্রশ্ন উঠছে, বাঙালি হয়ে এক বাঙালি ‘ভারতরত্ন’ নোবেলজয়ী সম্পর্কে এহেন মন্তব্য আদৌ কোন শিক্ষার পরিচয় দেয়?

দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বুধবার প্রশ্ন তোলেন, ‘‘জমিচোরকে কি নোবেল দেওয়া হয়েছে?’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘দেশ ওঁকে (অমর্ত্যবাবু) অনেক কিছু দিয়েছে। উনি দেশকে কী দিয়েছেন, তা নিয়ে রিসার্চ করতে হবে।’’ রাজনীতির কুশীলবদের বক্তব্য, একজন রাজনীতিবিদ কি এইভাবে তাঁর মাত্রা ছাড়াতে পারেন?

বামেরা প্রথমেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রুখে দাঁড়িয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এবার বিজেপি নেতার এই মন্তব্যে তীব্র নিন্দায় সরব কংগ্রেসও। অধীর চৌধুরী বলেন, “ওরা বাংলার অলংকারকে অপমান করে কোন বাংলাকে সোনা দিয়ে মুড়ে ফেলবে?”

আরও পড়ুন: ‘চাকরি পেয়েই ও কেমন বদলে গেল, বউয়ের ভালবাসা ফিরে পাওয়ার জন্য ধরনায় বসেছি’

এপ্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের ডিগ্রি নিয়েই সরব হয়েছে বিরোধী পক্ষরা। সেক্ষেত্রে নিজের ফাঁদ নিজেই খুঁড়েছেন দিলীপ ঘোষ। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ার সময় নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামায় নিজেকে পলিটেকনিক কলেজ থেকে উত্তীর্ণ বলে দেখান। পরে জানা যায়, দিলীপবাবু পলিটেকনিজ কলেজের ছাত্রই ছিলেন না। প্রশ্ন উঠছে, যিনি নিজেই তাঁর ডিগ্রি নিয়ে ভুল তথ্য দেন, তিনি কীভাবে এত বড় মাপের এক জন মানুষের সম্পর্কে এহেন মন্তব্য করতে পারেন।

Next Article