মালদা: কিছুতেই শান্ত হচ্ছে না কালিয়াচক (Kaliachak)। ফের মজুত করে রাখা বোমা উদ্ধার হল কালিয়াচক ও বৈষ্ণবনগরে। কোথাও জার ভর্তি বোমা, কোথাও ড্রাম ভর্তি বোমা। কালিয়াচকের রামনগর এলাকায় ব্যাগ ভর্তি তাজা বোমা উদ্ধারের (Bomb Rescued) ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সজল মণ্ডল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দার বাড়ির পাশের ঝোপের মধ্যে নাইনলের ব্যাগ দেখতে পান অনেকে। আচমকা একটা ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে অনেকেরই সন্দেহ হয়। সেই ব্যাগে কী রয়েছে দেখতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ সকলের! ব্যাগের মধ্যে ভর্তি বোমা। বোমা উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় উত্তেজনা শুরু হয়।
এদিকে বোমা উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় কালিয়াচকের বিশাল পুলিশবাহিনী। বোমা নিষ্ক্রিয় করতে আসে বম্ব স্কোয়াডও। নামানো হয় দমকলের ইঞ্জিন। রামনগরের এই এলাকাটি অত্যন্ত জনবহুল। সেখানে এভাবে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এলাকাবাসীরা বলছেন, তাঁরা জানতেই পারেননি কে বা কারা বোমা রেখে গিয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, প্রায় একই সময়ে বৈষ্ণবনগর থানার কুম্ভিরা মোহনপুর এলাকা থেকে একটি ড্রামে মজুত ১০০ টি-রও বেশি তাজা বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাজা বোমা কে বা কারা মজুত করে রেখেছিল তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ। এর সঙ্গে কোনওল রাজনৈতিক অনুষঙ্গ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
বেশিদিন আগের কথা নয়। কয়েকমাস আগেই, কালিয়াচকে রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের (Sabina Yeasmin) বাড়ির সামনেই বোমা মজুত করা হয়েছিল। রফিকুল শেখ নামে এক তৃণমূল নেতার পরিত্যক্ত বাড়িতেই চলছিল বিস্ফোরণ ঘটে। আচমকাই বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে তৃণমূল নেতার পরিত্যক্ত বাড়ি। বোমবাজির জেরে ছুটে আসেন এলাকাবাসী। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। কালিয়াচক ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পাটুয়াতলী চাঁদপুর গ্রামের পরিচিত তৃণমূল নেতা রফিকুল শেখের বাড়িতে ভোররাত্রে বোমাবাজির (Bomb Blast) আওয়াজ পাওয়া যায়।
কালিয়াচক থানার পুলিশ জানিয়েছিল, বাড়িটিতে অবৈধভাবে বোমা মজুত করা হচ্ছিল। কোনওকারণে দুই-তিনটি বোমা একসঙ্গে ফেটে যায়। বোমের তীব্রতায় আশেপাশের কয়েকটি ঘরের চালা উড়ে যায়। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা রফিকুল শেখ ও তাঁর অনুগামীদের বেশ কয়েকদিন পরে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এছাড়াও, কালিয়াচকের বাবুরহাট গ্রামের এক পরিত্যক্ত জমিতে বোমা মজুত করে রাখা হয়েছিল। কয়েকজন বাচ্চা সেখানে খেলতে গিয়ে বোমা বিস্ফোরণের জেরে আহত হয়। স্থানীয়রা দাবি করেন তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা ঘটে।
প্রসঙ্গত, কলিয়াচকে বোমা উদ্ধারের আগের দিনই শুক্রবার, উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদে পার্সেল বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ৪ জন আহত হয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের চিকিৎসা চলছে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে।
আরও পড়ুন: Binay Tamang: রাজ্যস্তরীয় নেতৃত্বের সঙ্গে পাহাড়-বৈঠকে বিনয়-রোশন, পৃথক অনীত