সামসেরগঞ্জ: বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া মোটের উপর অবাধ ও শান্তিপূর্ণই হচ্ছিল সামসেরগঞ্জের (Samserganj) ভোট। কিন্তু ভোটগ্রহের শেষ পর্বে কাটল তাল। না গোলাগুলি, হাঙ্গামা নয়। দুই ভুয়ো ভোটারকে কেন্দ্র করে ছড়াল তীব্র উত্তেজনা। অভিযোগ, এক তৃণমূল নেতা (TMC Leader) ওই দুই নাবালককে ভোট দিতে নিয়ে আসে। তাদের দিয়ে ছাপ্পা ভোট দেওয়ার ব্য়বস্থা করা হয়।
এদিন লস্করপুর প্রাইমারি স্কুলে ১১৬ নম্বর বুথে বিকালবেলা দু’জন ভুয়ো ভোটার পাওয়া যায়। দু’জনেই নাবালক। সামসেরগঞ্জ থানার পুলিশ তাঁদের আটক করে। অভিযোগ, ওই দুজনকে ভোট দিতে নিয়ে আসেন এক তৃণমূলের এক নেতা। সেই নেতার কথামতো ১১৬ নম্বর বুথে ভোট দিতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় দুই নাবালক। প্রথমে দুটো বাচ্চা ছেলেকে দেখে কেউ কোনও সন্দেহ করেনি। কিন্তু তাদের দিয়েই ভোটকেন্দ্রে ঢুকে ছাপ্পা দেওয়ানো হচ্ছে বলে স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করে।
এর পর ছুটে আসে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছে। শান্তিপূর্ণ ভাবে চলা ভোটের মাঝে কাটল তাল। কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তপ্ত হতে শুরু করে পরিস্থিতি। হইহই শুরু হয়ে যায়। কোনওক্রমে জনরোষ থেকে বাঁচিয়ে ওই দুই নাবালককে উদ্ধার করে আটক করে সামসেরগঞ্জ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদে দুই নাবালক জানিয়েছে, এক তৃণমূল নেতার কথাতেই তারা এসেছিল। তবে তারা ছাপ্পা ভোট দিয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। পুলিশের তরফে ওই তৃণমূল নেতার নাম বলা হয়নি।
এদিকে সামসেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী জইদুর রহমান বলেন, তাঁর কাছে হঠাৎই একটা ফোন আসে। বলা হয় ছাপ্পা ভোটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। শুনেই তিনি ওই ভোটকেন্দ্রে ছুটে যান। এদিকে পুলিশকে ঘিরে ততক্ষণ বিরোধী দলগুলির নেতাকর্মীরা শুরু করেছেন চোটপাট। প্রশ্ন ওঠে, আগে কেন সজাগ হয়নি পুলিশ। এতক্ষণ ধরে কীভাবে এই রকম কাজ করা গেল সবার নজর এড়িয়ে? স্থানীয়রা না বললে তো কিছুই জানা যেত না! কীভাবে কড়া পুলিশি প্রহারার মধ্যেও এমন কাজ করা গেল? সে সবের অবশ্য কোনও উত্তর দেননি দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসার।
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয় জোর রাজনৈতিক চাপানউতোর। তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বিরোধী নেতারা। যদিও পরিস্থিতি পরে নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে পুলিশ। দুই নাবালককে আটক করেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, সামসেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে মোট বুথ কেন্দ্রের সংখ্যা ৩২৯টি। মোট ভোটার সংখ্যা ২,৩৫৫১১। পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১,১৫২৩৭ এবং মহিলা ভোটারের সংখ্যা ১,২০২৭২। সামসেরগঞ্জে এদিন ভোটপর্বে মোতায়েন হয়েছিল ১৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী আমিরুল ইসলাম, কংগ্রেস প্রার্থী জইদুর রহমান, সিপিআই প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোদাশ্বর হোসেন এবং বিজেপি প্রার্থীর নাম মিলন ঘোষ।