মুর্শিদাবাদ: অকাল বৃষ্টি থামতে এবার নয়া বিপদ মুর্শিদাবাদে। গঙ্গার জলস্তর কমতেই এবার সামসেরগঞ্জে ভাঙনের ছোবল। নদী গর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা চাষের জমি। তলিয়ে গিয়েছে লীচু বাগান। রীতিমতো আতঙ্কে এলাকাবাসী।
মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের ধানগড়া এলাকা। সেখানে গঙ্গার জলস্তর কমতেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভাঙন। সেই ভাঙন দেখে রীতিমত শিউরে উঠছেন এলাকাবাসী। ভাঙনের জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন তাঁরা। ফের ভিটে-মাটি ছাড়ার আশঙ্কায় প্রহর গুনছেন স্থানাীয়রা। আজ সকাল থেকেই ভাঙন শুরু হয়েছে। বিঘের পর বিঘে জমি খেয়ে নিচ্ছে গঙ্গা।
কিছুদিন আগেই এলাকায় প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি গঙ্গাভাঙন রুখতে তেমন কোনও ব্যবস্থা না নিলেও কিছু দাওয়াই বাতলিয়ে গিয়েছিলেন। এলকাবাসীর উদ্দেশ্য তিনি বলেছিলেন নদীর ধারে কেউ বাড়ি না বানায়। সেচ দফতরের তরফে বারবার ভাঙন রোধের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী কোনও সমাধান মেলেনি।
এক বাসিন্দা বলেন, “দুবছর ধরে এই একই জিনিস দেখে যাচ্ছি। কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এর মধ্যে দু’বিঘা জমি, লিচু বাগান জলের তলায় চলে গিয়েছে। এরপর কী হবে? ভাবতে পারছি না। মুখ্য়মন্ত্রী কিছুদিন আগে এলেন কিন্তু গঙ্গা ভাঙন নিয়ে তেমন কিছু উদ্যোগ নিলেন না। প্রায় ৫০০ বাড়ি জলের নীচে চলে গিয়েছে। এরা প্রত্যেকে ঘর ছাড়া। কেন্দ্র-রাজ্য মিলিত ভাবে কাজ না করলে সমস্যার কোনও সামধান হবে না। ”
এর আগে গতমাসের ৯ তারিখ গঙ্গাভাঙন হয় এই সামশেরগঞ্জে। নদী ভাঙনের জেরে বেশ কিছুদিন ধরেই সমস্যায় পড়েছেন গঙ্গা তীরবর্তী এলাকার মানুষ। শুষ্ক আবহাওয়ায় নতুন করে গঙ্গার ভাঙন শুরু হওয়ায় ফের বিপদের মুখে গ্রামবাসী। চাচণ্ড গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, গঙ্গার তীরে দীর্ঘদিন ধরে থাকা বন্যাপ্রতিরোধক মাটির তৈরি বাঁধে গভীর ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। বাঁধের কিছু অংশ তলিয়ে গিয়েছে গঙ্গা গর্ভে। আর এতেই বিপদ দেখছেন সাধারণ মানুষ। কারণ, ওই ফাটল ক্রমে বাড়তে থাকলে ভাঙনের গ্রাসে বাড়িঘর হারাতে হতে পারে এলাকাবাসীর।
নদীবাঁধে ওই ফাটলের জেরে ইতিমধ্যেই গঙ্গা তীরবর্তী দুটি স্কুল জলে ডোবা কেবল সময়ের অপেক্ষা। ভাঙনের জেরে ফাটল বৃদ্ধি হলেই আর দুই একদিনের মধ্য়েই আস্ত দুটো স্কুল চলে যাবে জলের তলায়। শুধু তাই নয়, শেষ কয়েকদিনে গ্রামের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে গঙ্গা। এরকম চলতে থাকলে ডুবে যেতে পারে গোটা গ্রাম। যদিও, নদীবাঁধে ফাটলের জেরে বাঁধের উপর দিয়ে যাতায়াত আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ফাটলে বালির বস্তা পুরে দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ করা হোক।