তলপেটে সেলাইয়ে লাথি, চেয়ার থেকে টেনে ছুড়ে ফেলা হল নার্সকে! ‘ঘৃণ্য’ ঘটনা মুর্শিদাবাদে
Murshidabad: এই নিয়ে বাঁধে গোল! রোগীর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে জড়ো হয়ে যান।
মুর্শিদাবাদ: ‘রোগীর অবস্থা খারাপ হচ্ছে, আমাদের কাছে ওত সরঞ্জাম নেই। রেফার করতে হবে…’ এটা বলেই ভুল করে ফেলেছিলেন নার্স! রোগীর আত্মীয়রা রীতিমতো শ্লীলতাহানি করলেন তাঁর। তলপেটে লাথি মারলেন, চেয়ার থেকে তুলে ছুড়ে ফেলে দিলেন! দরজা বন্ধ করে দিয়েও আটকানো সম্ভব হল না তাঁদের। চিকিত্সককে আটকে রেখেও চলে নিগ্রহ। আরও একবার নক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী থাকল মুর্শিদাবাদ (Murshidabad)। শক্তিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্হ্য কেন্দ্র ডাক্তার নিগ্ৰহের ঘটনায় এখন পর্যন্ত গ্ৰেফতার দুই। ঘটনায় জড়িত দের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে শক্তিপুর থানার পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই স্বাস্হ্য কেন্দ্র পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সিওপিডি আক্রান্ত শক্তিপুর এলাকারই বাসিন্দা বছর তিপান্নর মুর্শিদ বেগমকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁর প্রাথমিক চিকিত্সা হয়। তবে সন্ধ্যার পর থেকে তাঁর অবস্থার অবনতি হতে থাকে। কর্তব্যরত চিকিত্সক অনুুপম মণ্ডল তাঁকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করেন।
এই নিয়ে বাঁধে গোল! রোগীর পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে জড়ো হয়ে যান। হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। কর্তব্যরত চিকিত্সক ও নার্সরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু কাজ হয় না তাতেও। অভিযোগ, রোগীর আত্মীয়রা আরও বেশি চোটপাট করতে থাকেন। এরপর চিকিত্সকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তাঁরা। ঝামেলায় স্থানীয় এক নেতা নিজাম সারেডির নামও উঠে আসছে। তাঁরই নেতৃত্বের রোগীর আত্মীয়রা বিক্ষোভ দেখান। এরপর চিকিত্সক বাধা দিতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। রোগীর পরিবারের আত্মীয়দের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন নার্সও। ঘটনায় অনুপম মণ্ডল নামে এক চিকিত্সক ও রাধারানি দে নামে এক নার্স আহত হয়েছেন বলে খবর।
ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে চিকিত্সক রাধারানি দে বলেন, “নাইট শিফটে কাজে আসি। রোগীর অবস্থা খারাপ হচ্ছিল, তাতে রেফার করা হয়। কিন্তু কেন রেফার, তা নিয়েই ওঁরা ঝামেলা শুরু করল। দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু দরজা খুলে ওঁরা ভিতরে ঢুকে মেরেছেন। আমাকে চেয়ার থেকে টেনে ফেলে দিয়েছে। আমার পেটে লেগেছে।”
এপ্রসঙ্গে বিএমওএইচ তরুণ বারুই বলেন, “এটা দুঃখজনক ঘটনা। চিকিত্সকদের মন ভেঙে যাচ্ছে। এই অতিমারি পরিস্থিতিতে দিনরাত এক করে চিকিত্সকরা খাটছেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর পরিবাররা সাহায্য করছেন না। আমি থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। চিকিত্সকদের নিগ্রহ করেছেন, নার্সদের শ্লীলতাহানি করেছেন। এর প্রতিকার হওয়া উচিত।”
রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। আরও পড়ুন: ৫০০টাকা থেকে একলাফে ৪০০০ টাকা! বন্ধ ক্যাম্পাস, বেড়েই যাচ্ছে ফি, একাধিক কলেজে বিক্ষোভ পড়ুয়াদের