মালদা ও মুর্শিদাবাদ: বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসে সরকারি খাতে দুর্নীতি রুখতে একাধিক কড়া পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেকোনো সরকারি খাতে তৃণমূলের কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ বারবার করে এসেছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে কাটমানির দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে কঠোরহস্ত হতে শুরু করে রাজ্য সরকার। কিন্তু, তারপরেও, সরকারি নজর এড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সাধের প্রকল্প ‘রূপশ্রী’ (Rupasree) নিয়েও জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে দুটি জেলায়। মালদা ও মুর্শিদাবাদে শনিবারই, রূপশ্রী নিয়ে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগ সামনে আসে। টিভি নাইন বাংলার খবরের জেরে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
মালদায়, রূপশ্রীর (Rupasree) টাকা নিয়ে জালিয়াতি কাণ্ডে তড়িঘড়ি তদন্ত কমিটি গঠন করল জেলা প্রশাসন। তিন সদস্যের এই তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলা শাসক ও অন্য দুই আধিকারিক। তিন সদস্যের এই বিশেষ কমিটি অভিযোগকারীদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য় সংগ্রহ করবে। খতিয়ে দেখা হবে অভিযোগকারীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও। ফেরত নেওয়া হবে অতিরিক্ত টাকা। কোথা থেকে কে বা কারা এই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তা খতিয়ে দেখা হবে। সরকারের প্রতিনিধি হলেও দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।
মুর্শিদাবাদের সাগরদীঘিতে রূপশ্রী (Rupasree) প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে আলি আবুল আওয়মকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৬, ৪১৭ ও ৪২০ ধারায় প্রতারণা, অপ্রত্যক্ষভাবে সম্পত্তি হস্তান্তর ও আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে মামলা রুজু করা হয়েছে। রবিবারই ধৃতকে জঙ্গিপুর আদালতে তোলা হলে পাঁচদিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আলির সঙ্গী রবিউল পলাতক। তাঁরও খোঁজ করছে পুলিশ।
দুই জেলায় ঠিক কীভাবে চলছিল জালিয়াতি? ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, দুই ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে যাঁরা জালিয়াতির শিকার হয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই প্রতারকদের প্রদত্ত কাগজে টিপছাপ দিয়েছিলেন। অর্থাৎ, পড়ে দেখে সই করা তাঁদের সম্ভব ছিল না। এই সুযোগটাই নিয়েছিল প্রতারকরা। সহজে যাতে ধরা না পড়ে সেইজন্যেই এমন পরিবারদের বেছে নেয় প্রতারকেরা যাঁরা ওই প্রতারকদের কার্যকলাপে কোনও সন্দেহ করবেন না। পরিকল্পনামাফিক কাজও এগিয়েছিল। কিন্তু, আবেদন না করা সত্ত্বেও টাকা পাওয়ায় সন্দেহ হয় ওই পরিবারগুলির। আর তাতেই প্রকাশ্যে আসে জালিয়াতি চক্র। বিরোধী শিবিরের দাবি, এই ঘটনায় শাসক গোষ্ঠীর পঞ্চায়েত স্তরের নেতৃত্ব যুক্ত রয়েছে। যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: না চাইতেই অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার! ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পে বিবাহিত মহিলারাও পাচ্ছেন টাকা, নেপথ্যে কারা?