মুর্শিদাবাদ: “সব সাধু তো সমান হয় না। এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ রয়েছেন। কার্তিক মহারাজ। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে। আমি ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্টকে বুথে বসতে দেব না। তাকে আমি আর শ্রদ্ধা করি না।” চব্বিশে লোকসভা ভোটের আবহে এই ভাষাতেই কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই কার্তিক মহারাজের হাতেই পদ্মশ্রী তুলে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই খবর নিয়ে যখন হইচই চলছে তখন টিভি ৯ বাংলার মুখোমুখি হয়ে মমতার প্রতি ‘কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করলেন কার্তিক।
তাঁর কাছে প্রথম ফোনটা এসেছিল রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে। চাওয়া হয়েছিল বায়োডাটা। এদিন নিজেই সে কথা জানালেন। নিজেই বললেন, “প্রথম ফোন এসেছিল রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে। আমার বায়োডাটা চাইছিল। আমি বলি সন্ন্যাসীর বায়োডাটা তো কিছু থাকে না। তারপরই ওনারা জানান ওই সিদ্ধান্তের কথা। আমি জানাই আমাকে যখন নির্বাচন করা হয়েছে তখন নিশ্চয় সেই সিদ্ধান্ত আমি মাথা পেতে নেব।” তবে সাধু-সন্ন্যাসীদের যে আলাদা করে প্রতিষ্ঠার কোনও প্রয়োজন নেই তাও এদিন নিজেই বললেন তিনি। কার্তিকের কথায়, “আমরা সন্ন্যাসী মানুষ। এই পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণের প্রয়োজনই পড়ে না। রবীন্দ্রনাথের কথায় বলতে গেলে খ্যাতির বিড়ম্বনা। সন্ন্যাসীর কাছে প্রতিষ্ঠা বৃষ্ঠা স্বরূপ। তবুও বাংলার সন্ন্যাসী হিসাবে আমি কৃতজ্ঞ। আমার ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতা প্রচারের জন্যই ওরা আমাকে বেছে নিয়েছেন। আমি টিভি ৯ চ্যানেলের সমস্ত দর্শকদের কাছে আমি শুভেচ্ছা চাইব। তাঁরা আমাকে আশীর্বাদ করুন আমি যাতে ধর্ম প্রচারে শেষদিন পর্যন্ত থাকতে পারে।”
এরপরই নিজেই মমতার প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “কেউ বলবেন দিদির আশীর্বাদ। নিঃসন্দেহে দিদি আমাকে আশীর্বাদ করেছেন। তিনি আমার নাম আরও ব্যাপক আকারে প্রচার করেছেন। দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী আমার নাম উচ্চারণ করেছেন। এটা একটা বড় প্রাপ্তি।” তবে পদ্মশ্রী পাওয়ার ফলে সন্ন্যাসী হিসাবে তাঁর দায়িত্ব যে আরও বাড়ল তাও মনে করালেন নিজেই। দায়িত্ব বাড়ল ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিও। কার্তিকের কথায়, “বর্তমানে সমাজে তো অবক্ষয় চলছে। বিশেষ করে বাংলার যুব সমাজ বিপথগামী। আমি যেন সেই যুব সমাজের মধ্যে আরও বেশি করে দেশাত্মবোধ জাগাতে পারি। আচার্য স্বামী প্রণবানন্দ মহারাজের ভারত সেবাশ্রম সংঘের যে উদ্দেশ্য সেটা যাতে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারি তার দায়িত্বও আরও বেড়ে গেল।”