AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Nadia: একদিন আগে মৃত্যু বৃদ্ধার, মেয়ে বলছে, ‘মায়ের ঘাম হচ্ছে’

Nadia: বৃদ্ধার মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে বাধা দেন পিয়ালী। রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা তাঁকে বোঝান। তাঁর মাকে চিকিৎসা করাতে হবে তাই তাঁরা এসেছেন। কিন্তু ওই বৃদ্ধাকে তুলতে গিয়ে রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা দেখতে পান, তাঁর শরীরের একাধিক অংশ পচতে শুরু করেছে। বুঝতে পারেন তিনি মৃত। কিন্তু মেয়ে পিয়ালী তা মানতে নারাজ।

Nadia: একদিন আগে মৃত্যু বৃদ্ধার, মেয়ে বলছে, 'মায়ের ঘাম হচ্ছে'
বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে মানতে পারছেন না তাঁর কন্যাImage Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Jul 08, 2025 | 1:20 PM
Share

কল্যাণী: ২৪ ঘণ্টা আগে মৃত্যু হয়েছে বৃদ্ধার। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কিন্তু, মায়ের মৃত্যুর কথা মানতে রাজি নন তরুণী। মৃতদেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ও সেকথা বারবার বলছিলেন। এমনকি, হাসপাতালে গিয়ে মায়ের মাথায় হাত দিয়ে তাঁর স্বগতোক্তি, ‘মায়ের ঘাম দিচ্ছে।’ তাঁর মায়ের চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের কাছেও বারবার কাতর আর্জি জানাতে থাকেন। ঘটনাটি নদিয়ার কল্যাণীর। মৃত মহিলার নাম রুমা দত্ত।

বছর সত্তরের রুমা দত্ত ও তাঁর বছর তিরিশের কন্যা পিয়ালী দত্ত বাড়িতে থাকতেন। স্থানীয়দের মারফত সোমবার দুপুরে কল্যাণী রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা জানতে পারেন, রুমা দত্ত মৃত অবস্থায় ঘরে পড়ে রয়েছেন। তাঁর মেয়ে মায়ের মৃতদেহ ঘরের মধ্যে আগলে বসে আছেন। খবর পেয়ে আসে রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা। অনেক ডাকাডাকির পর পিয়ালী দরজা খোলেন। ঘরের দরজা খুলতেই রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা খোঁজখবর নিয়ে ওপরের ঘরে যেতেই দুর্গন্ধ পান। দেখতে পান, ঘরের মধ্যে ওই বৃদ্ধা নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে আছেন। তার গা দিয়ে গন্ধ ছড়াচ্ছে।

বৃদ্ধার মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে বাধা দেন পিয়ালী। রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা তাঁকে বোঝান। তাঁর মাকে চিকিৎসা করাতে হবে তাই তাঁরা এসেছেন। কিন্তু ওই বৃদ্ধাকে তুলতে গিয়ে রেড ভলান্টিয়ার্সের সদস্যরা দেখতে পান, তাঁর শরীরের একাধিক অংশ পচতে শুরু করেছে। বুঝতে পারেন তিনি মৃত। কিন্তু মেয়ে পিয়ালী তা মানতে নারাজ।

পিয়ালী জেদ ধরেন, তাঁর মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তৎক্ষণাৎ ডাকা হয় অ্যাম্বুল্যান্স। খবর দেওয়া হয় কল্যাণী থানায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় কল্যাণী থানার পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতিতে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে। সেখানে চিকিৎসকেরা বলেন, বৃদ্ধা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। কিন্তু তা মানতে নারাজ তাঁর মেয়ে পিয়ালী। বলেন, মাকে হাসপাতালে নিয়ে চলো। কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় মৃতদেহ। হাসপাতালের একের পর এক চিকিৎসকেরা দেখার পরে বলেন, বৃদ্ধা মৃত। সেখানেও পিয়ালী মানতে নারাজ যে তাঁর মা মৃত। রীতিমতো হাসপাতালে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। নিজেই যেন চিকিৎসকের ভূমিকা পালন করতে শুরু করেন। কখনও মুখের সঙ্গে মুখ ঠেকিয়ে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা, কখনও দু’হাত দিয়ে বুক চেপে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা। বৃদ্ধার গায়ে হাত দিয়ে স্বগতোক্তি করলেন, ‘মায়ের ঘাম হচ্ছে কেন?’

খবর পেয়ে হাসপাতালে এসে পৌঁছান মৃত বৃদ্ধার পুত্র স্বরূপ দত্ত ও তাঁর স্ত্রী। মা-বোনের সঙ্গে ওই বাড়িতে তিনি থাকতেন না। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে কলকাতায় তিনি থাকেন। বোনের এই আচরণে হতবাক তিনি। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখিও হতে চাননি। পরে ওই বৃদ্ধার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে পাঠানো হয় কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালের পুলিশ মর্গে।

প্রতিবেশীরা বলছেন, বাড়িতে মা, মেয়ে ছাড়া আর কেউ থাকতেন না। সেভাবে কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন না দু’জনেই। ফলে একে অপরের ভরসা ছিল। সেই ভরসা থেকেই মায়ের মৃত্যু হয়তো মেনে নিতে পারছেন না পিয়ালী। তবে ঘর খোলার পর যেভাবে দুর্গন্ধ বেরিয়েছে এবং মৃতদেহ যেভাবে উদ্ধার হল, তাতে স্পষ্ট যে রুমা দত্তের মৃত্যু হয়েছে অনেক আগেই।