নদিয়া: বাড়িতে ক্রমাগত স্ত্রীর উপর অত্যাচার। কখনও শারীরিক নির্যাতন, কখনও আবার মানসিক নির্যাতন।একা স্বামী নয়, শ্বশুরবাড়ির সকলের উপরই একই অভিযোগ উঠছিল। সেই কারণে দীর্ঘদিন বাপের বাড়িতে এসে থাকতেও শুরু করেছিলেন স্ত্রী। তবে স্বামী ফেরত নিতে আশায় মান-অভিমান ছেড়ে ফের স্বামীর হাত ধরে ফিরে যান শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু তখনও বুঝে ওঠেননি সবটা এখনও ঠিক হয়নি। শ্বশুরবাড়ি ফিরতেই ফের শুরু নরক যন্ত্রণা। আর সব শেষে পরিণতি হল মৃত্যু। ঘরের মধ্যেই গৃহবধূর শরীরে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে।
নদিয়ার শান্তিপুর থানার ঢাকা পাড়া এলাকার ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর ছয়েক আগে তাহেরপুর থানার বিননগর বিলপাড়া বাসিন্দা যুবতী মিনা পালের সঙ্গে দেখাশোনা করে বিয়ে হয় শান্তিপুর থানা ঢাকা পাড়ার বাসিন্দা উজ্জ্বল পালের। বর্তমানে তাদের একটি তিন বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। অভিযোগ, বিয়ের এক বছর পর থেকেই বিভিন্ন অজুহাত নিয়ে ওই মহিলার স্বামী উজ্জল পাল, শ্বশুর অতীশ পাল, শাশুড়ি কল্পনা পাল এবং জা টুম্পা পাল তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাত। কিছুদিন আগেও নাকি তাঁকে টাকা চুরির মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ গৃহবধূর পরিবারের।
বিয়ের পর থেকেই শুরু হয়েছে অত্যাচার। এর আগেও অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একাধিকবার বাপের বাড়ি চলে গিয়েছিলেন তিনি। তবে, স্বামী বারবার তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। পরিবারের অভিযোগ, কয়েকদিন আগেও তাঁকে অনুরোধ করে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিল উজ্জ্বল।এরপরই পরিকল্পনামাফিক তাঁকে মেরে ফেলে গায়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
মেয়ের মৃত্যুর খবর শুনে পরে শান্তিপুর থানায় মিনার বাপের বাড়ির সদস্যদের তরফ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। গৃহবধূর পরিবারের লোকজন চাইছেন আইন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে শান্তিপুর থানার পুলিশ।
মৃতা বাবা অঝোরে কাঁদতে-কাঁদতে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “মেরেই ফেলল ওরা আমার মেয়েটাকে। এরা কি মানুষ? এত খারাপ আমি দেখিনি। ওদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড চাই। আমার মেয়েটার উপর এত অত্যাচার করল। ওদের শাস্তি হোক চাই।”