নদিয়া: করোনা (Corona) আবহে একের পর এক চিকিৎসক আক্রান্ত হচ্ছেন রাজ্যে। বাদ যায়নি নদিয়ার শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালও। একের পর এক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বন্ধের মুখে হাসপাতালের স্পেশাল আউটডোর পরিষেবা। ফলত, আগামি দিনে ব্যাহত হতে পারে চিকিৎসা পরিষেবা। কপালে চিন্তার ভাঁজ স্বাস্থ্যর্তাদের।
জানা গিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার থেকেই বন্ধ হতে চলেছে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে স্পেশাল আউটডোর পরিষেবা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নোটিস দিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। একে একে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। সূত্রের খবর, এই পর্যন্ত হাসপাতালের অন্তত পাঁচ জন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। কোভিড সংক্রামিত হয়েছেন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও। এর ফলে পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে তাই মঙ্গলবার থেকেই স্পেশাল আউটডোর পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসক মহল আশঙ্কা করছিলেন যে একের পর এক চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন তাতে যে পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে। সেটাই হল। বিগত দিনেও করোনার কারণে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এই হাসপাতালে। আবারও নতুন করে পরিষেবা ব্যাহত হতে চলেছে। ফলে আবারও সমস্যায় পড়বেন সাধারণ রোগীরা। চিকিৎসা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে সাধারণ মানুষ। কার্যত অভূতপূর্ব সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষকে।
এদিন হাসপাতালের বাইরে পরিষেবা নিতে আসা রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, তাঁরা চিন্তায় রয়েছেন। হঠাৎ করে অসুস্থ মানুষকে নিয়ে এখন কোথায় যাবেন! একই সঙ্গে করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকেরা যাতে জলদি সুস্থ হয়ে যান, কামনা করছেন তাঁরা বলে জানান একাধিক রোগী।
এদিকে কর্তৃপক্ষের তরফে হাসপাতাল সুপার নিজেই জানান, “আমাদের পাঁচজন চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হওয়ার জন্য স্পেশালিস্ট ওপিডি যেমন, ইএনটি, আই- এগুলো কিছুদিন বন্ধ থাকছে। জেনারেল আউটডোর, এমার্জেন্সি, ওটি খোলা থাকছে। কিন্তু ম্যান পাওয়ার কম হওয়ার জন্য স্পেশাল আউটডোর বন্ধ রাখতে হচ্ছে।” তবে আশা করা যাচ্ছে শীঘ্রই আবার হাসপাতাল পরিষেবা সম্পূর্ণ ভাবে ঠিক হয়ে যাবে।
এদিকে শুধু শান্তিপুরই নয়, বিভিন্ন জেলা হাসপাতালের পরিষেবায় প্রভাব ফেলছে করোনাভাইরাস। যেমন, সুন্দরবন তথা দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার অন্যতম ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল ও বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। সোমবার পর্যন্ত সেখানে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে প্রায় ৪১ জন করোনায় হয়েছেন বলে খবর। একই ভাবে বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালেরও চিকিৎসক,নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মিলিয়ে ১২ জন সংক্রমিত হয়েছেন। সুন্দরবন এলাকার রোগীদের পরিষেবা দেওয়া নিয়ে কার্যত চিন্তায় স্বাস্থ্য মহল।
আরও পড়ুন: Corona Virus: আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা ‘হাফসেঞ্চুরি’ পার, সুন্দরবনে ধুঁকছে স্বাস্থ্য পরিষেবা