উত্তর ২৪ পরগনা: অভিনব কায়দায় ব্যাঙ্ক প্রতারণার শিকার দত্তপুকুরের এক বৃদ্ধ। একটা মাত্র ফোন কলেই বৃদ্ধের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) থেকে গায়েব ৯৮ হাজার টাকা! ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের নামে ফোন করে ওটিপি চাওয়ার অভিযোগ। ইতিমধ্যেই দত্তপুকুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতারিত বৃদ্ধ। ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে বিষয়টিতে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে প্রতারিতের পরিবার।
প্রতারিত বৃদ্ধের অভিযোগ গত ২৮ অগস্ট তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্য়ানেজারের পরিচয় দিয়ে ফোনকলের অপরপ্রান্তে থাকা জালিয়াত শঙ্কর দত্ত নামে ওই বৃদ্ধকে নির্দেশ দেন ফোনে যাওয়া ওটিপির নম্বর শেয়ার করতে। তাহলেই তাঁর এটিএম কার্ড (ATM Card) সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হবে। যথারীতি সেই কথা শুনেই শঙ্করবাবু ফোনে আসা ওটিপি বাতলে দেন। তারপরেই চরম দুর্ভোগ! অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব ৯৮ হাজার টাকা!
ঠিক কী হয়েছিল ২৮ অগস্ট? শঙ্কর দত্ত নামে ওই বৃদ্ধের কথায়, “গত ২৮ অগস্ট আমার কাছে ফোন আসে। ফোনে, ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বলে আমায় বলা হয় এটিএমের কার্ড নম্বর, পিন শেয়ার করতে।আমি কারণ জিজ্ঞেস করে ফোনে বলা হয়, ‘আমির ব্যাঙ্কের ম্যানেজার, আমায় বিশ্বাস করছেন না!’ আমিও সেভাবে কিছু বুঝতে পারিনি। শুধু তাই নয়, আমায় একটা চার সংখ্য়ার ওটিপি দিয়ে বলা হয়, সেই নম্বরটা শেয়ার করতে। আমার অ্যাকাউন্ট নম্বরও চাওয়া হয়। এরপরেই, দেখি আমার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা হচ্ছে। ২৯ তারিখ থেকে ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় আমি যেতে পারিনি। পরে ২ সেপ্টেম্বর যখন ব্যাঙ্কে যাই, তখন ব্যাঙ্কের ম্যানেজারকে সব কথা খুলে বলি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে বলেন এটিএম কার্ড ব্লক করাতে। আমি আমার এই সেভিংস অ্যাকাউন্টের জন্য একটা এটিএম কার্ড পেয়েছিলাম। কিন্তু, সেই কার্ডে কখনওই টাকা তুলিনি। কারণ কার্ড চালু ছিল না। অন্য কিছু সমস্যাও ছিল। সেসব আমি সঠিক বুঝি না। তাই পারতপক্ষে ওই কার্ড ব্যবহার করতাম না। ফোন আসায় ভেবেছিলাম, হয়ত কার্ডের সমস্যাটা মিটবে। তাই আর সন্দেহ প্রকাশ করিনি। কিন্তু সে যে এমন হবে কে জানত। এদিকে ম্যানেজারকে সবটা বলার পর তিনিও কোনও পদক্ষেপ করছেন না।”
প্রতারিত বৃদ্ধের ছেলে বলেন, “বাবা বয়স্ক মানুষ। ওতশত প্যাঁচ-পয়জার বোঝেন না। আমরা বাড়িতে ছিলাম না যখন ফোন এসেছিল। থাকলে আমরাই বারণ করতাম। এখন এতগুলো টাকা চলে যাওয়ার পর ব্যাঙ্ক ম্যানেজার বলছে বাকি টাকা যা রয়েছে তা অন্য ব্য়াঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে জমা রাখতে। এই অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিতে। প্রশ্ন হচ্ছে, বাবা গত ১ তারিখ ব্য়াঙ্কে গিয়েছিলেন। তখন ম্যানেজার খালি ‘দেখছি’ বলে ছেড়ে দিয়েছিলেন। এতদিন পর বলছেন অন্য অ্যাকাউন্ট করতে। আমরা তাহলে কী করব! কোথায় যাব! একজন ম্য়ানেজার কীভাবে এত দায়িত্বহীন হতে পারেন! ”
যদিও, ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার জানিয়েছেন, বারবার এই ধরনের জালিয়াত সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়। তারপরেও মানুষ সেসব না শুনে ওটিপি শেয়ার করছেন তো কখনও অ্যাকাউন্ট নম্বর বাতলে দিচ্ছেন। সুযোগ পাচ্ছে জালিয়াতরা।অন্যদিকে, দত্তপুকুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করা হচ্ছে। গোটা ঘটনাটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও পড়ুন: আচমকা ডায়ারিয়া সংক্রমণ বৃদ্ধি কামারহাটিতে, মৃত ২, আক্রান্ত ৬৮