উত্তর ২৪ পরগনা: এক জনের পায়ে বিশেষ সমস্যা। লাঠি হাতে হাঁটেন। মধ্য বয়স্ক আরেকজনের ঢিলেঢালা শার্টের ওপর দিয়ে গলায় পেঁচানো একটা মাফলার। কাঁচা পাকা চুল, মুখে দাড়ি… দৃশ্যত কোনও ছাপোষা চাষি কিংবা ছোটখাটো ব্যবসায়ী! কিন্তু তাদের অ্যাকাউন্টে গত কয়েক মাসে হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে লক্ষ লক্ষ টাকা জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগে বনগাঁর গোপালনগর থেকে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করল গুজরাট পুলিশ।
অনলাইনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতানোর অভিযোগে গুজরাট পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে গোপালনগর থানা এলাকায় হানা দেয়। বাসুদেব বাছারা ও শুকলাল তালুকদার নামে দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই দুই ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস খতিয়ে দেখেছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আদান প্রদানের প্রমাণ পেয়েছে গুজরাট পুলিশ ।
এই ঘটনার সঙ্গে আরও এক প্রতারক প্রতাপ মন্ডল জড়িত আছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর । ধৃতদের বিরুদ্ধে সাইবার জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ধৃত দুই ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে লক্ষাধিক টাকা ও মোবাইল এবং ব্যাঙ্কের পাসবুক । ধৃতদের শুক্রবার বনগাঁ মহকুমা আদালতে পেশ করা হয়। ট্রানজিট রিমান্ডে গুজরাট নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করেছে গুজরাট পুলিশ । বিচারক ধৃতদের ৬ দিনের ট্রানজিট রিমান্ডে গুজরাট নিয়ে যাবার আবেদন মঞ্জুর হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সপ্তাহ খানেক আগেই কলকাতা পুলিশের জালে ধরা পড়ে শহরের অন্যতম কুখ্যাত দুষ্কৃতীর শেখ বিনোদ। ৪৫ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগে এই কুখ্যাত দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগে কলকাতা গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকদের হাতে আগেই ধরা পড়েছিল ৭ জন। তাদের জেরা করেই উঠে আসে বিনোদের নাম। ব্যাঙ্ক জালিয়াতির মাস্টার মাইন্ড সে।
গত ১১ নভেম্বর পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সিআইটি রোড শাখার একজন গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় ৪৫ লক্ষ টাকা। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে জানা যায়, ওই ওই শাখার এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের এম্প্লয়ি আইডি এবং পাসওয়ার্ড হ্যাক করে ব্যাঙ্কের সার্ভার থেকে লগইন করা হয়েছিল।
আগে অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে লগ ইন করেই রেজিস্ট্রারড মোবাইল নম্বরটি বদলে ফেলা হয়। তারপরই ধীরে ধীরে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয় অ্যাকাউন্ট থেকে। শেষ কয়েক বছরে বেশ ভালো ভাবে এই কাজে হাত পাকিয়েছিল শেখ বিনোদ।
আরও পড়ুন: বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো! এই বুঝি কী হয় কী হয়…মামলার ফাঁসে থমকে বিপজ্জনক বাড়ির সংস্কার