উত্তর ২৪ পরগনা: চাকরি দেওয়ার নামে ভুয়ো কল সেন্টারের ব্যবসা ফেঁদে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাতজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি আরএন টেগোর রোড থেকে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, ধৃতরা ওই কল সেন্টারে চাকরির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নেন।
পানিহাটির আরএন টেগোর রোডের একটি বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন কয়েকজন। তাঁরা বাড়ির মালিককে বলেছিলেন এখানে আয়া সেন্টার হবে। লোকজনকে নিয়োগ করা হবে। কল সেন্টারের মাধ্যমে বিভিন্ন পদে চাকরিও পাবেন অনেকে।
স্থানীয়রা জানান, নিয়মিত এখানে বহু ছেলে মেয়ে আসেন। এমনও তাঁরা জানতে পেরেছেন, ২০০ টাকার পরিবর্তে ফর্ম দেওয়া হোত প্রথমে। তারপর চাকরি দেওয়ার নামে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরিয়ে আরও টাকা তুলত এই ভুয়ো কল সেন্টারের লোকজন।
অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে মানুষের থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে ভুয়ো কল সেন্টারটি চলছিল। সেখানে দূর দূরান্ত থেকে বহু পুরুষ ও মহিলা চাকরির জন্য নিয়মিত আসতেন। শুধু পানিহাটিতেই নয় এই কল সেন্টারের অন্যান্য জায়গায়ও অফিস আছে বলে এলাকার লোকজনের দাবি।
বেশ কিছুদিন ধরেই এদের আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় খড়দহ থানার পুলিশকে জানানো হয় বিষয়টি। এরপরই পুলিশ গোপন অভিযান চালায়। সাতজনকে গ্রেফতারও করে। তবে এলাকার লোকজনের বক্তব্য, আরও কয়েকজন এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। তাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে খড়দহ থানার পুলিশ।
এলাকার বাসিন্দা কমল পাল বলেন,”অনেক দিন ধরেই শুনছি বাইরে থেকে এখানে লোকজন আসে চাকরির জন্য। ওরা ফর্ম দেয়। কিন্তু সেখানে কোনও রেজিস্ট্রেশন নম্বর বা কিছু নেই। ২০০ টাকা করে এন্ট্রি ফিও নেয় আবার। এরপর ওরা বলে ২ হাজার, আড়াই হাজার দিলে নিয়োগের দিন জানিয়ে দেবে। যেই ওই টাকা পেয়ে যায় তখন বলে আরও ভাল জায়গায় কাজ দেব ১০ হাজার টাকা দিন। এভাবে চলছিল। কেউ বোধহয় থানায় ফোন করেছে। এরপর দেখলাম পুলিশ এসে তুলে নিয়ে গেল। ওদের গ্যাং আছে আরও। অন্য জায়গায়ও অফিস আছে। খবরের কাগজে আবার বিজ্ঞাপণও দিয়েছিল। সেই দেখেই চাকরি প্রার্থীরা ভিড় করে।”
বাড়ির মালিক উত্তম ঘোষের কথায়, “আমরা এসবের তো কিছুই বুঝতে পারিনি। আমাদের বলেছিল সেন্টার করবে। আয়া সেন্টারে নিয়োগ করবে। সাফাইকর্মী, দারোয়ান নেবে। আমরা পাঁচ সাতদিন দেখার পরই বলে দিই এত লোকজন আসছে রোজ, আমাদের পক্ষে পাড়ায় এভাবে ঘর দেওয়া সম্ভব না। আমি থানাতেও জানাই। চার পাঁচজন কাজ করত। কিন্তু বাইরের লোক আসা শুরু হতেই আমরা আর রাজি ছিলাম না ঘর দিতে। খুব বেশি দিন না, ১০-১১ দিন হয়েছে।”