Hasnabad: সমাজসেবার মাশুল? তৃণমূলের আদি গোষ্ঠীর নেতার বহিষ্কার নিয়ে তোলপাড় হাসনাবাদে
Hasnabad: সমাজসেবাকে কেন্দ্র করে দলের পুরোনো নেতাকে বহিষ্কারের ঘটনা কানে এসে পৌঁছয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এমন বহিঃপ্রকাশে স্তম্ভিত হয়ে যান তৃণমূল ভবনের নেতারা।

হাসনাবাদ: দল থেকে বহিষ্কারের নেপথ্যে সমাজসেবার মাশুল? তৃণমূলের আদি গোষ্ঠীর নেতাকে বহিষ্কার নব্য গোষ্ঠীর ব্লক সভাপতি। আর তাতেই ফের দলের অন্দরে কোন্দল কাঁটায় চাপানউতোর তৈরি হয়েছে হাসনাবাদে। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে হাসনাবাদে তৃণমূল করেন আনন্দ সরকার। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী বিভিন্ন সময় পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে দায়িত্বেও ছিলেন। কিন্তু ইদানিং বেশ খানিকটা কোণঠাসা। নেপথ্যে নব্যগোষ্ঠীর প্রভাব? আনন্দর অনুগামীরা বলছেন অন্তত সে কথাই। তাঁদের দাবি পদে না থেকেও মানুষের নানা উপকার করেই স্থানীয় নবীন নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়েছেন দলের প্রবীণ নেতা। তবে যে নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে তিনি সবটাই উড়িয়ে দিচ্ছেন।
এদিকে রাজনীতিতে কোণঠাসা হলেও সামাজিক কাজ চালিয়ে যান আনন্দবাবু। হাসপাতালে ভর্তি থেকে কিংবা অন্যান্য পরিষেবা। কলকাতার শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত কাজ করিয়ে দেন। অনুগামীদের অভিযোগ, তাতেই যেন দিনে দিনে রোষানলে ব্লক সভাপতির। সম্প্রতি হাসনাবাদের জনৈক দিব্যেন্দু হালদার তাঁর শিশু কন্যার চিকিৎসার জন্য বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বারংবার যোগাযোগ করেও সুরাহা হয়নি। ঘটনা শুনে এগিয়ে আসেন আনন্দ। মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাট অফিসে যোগাযোগ করে বাচ্চাটির জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন। নিজের খরচে গাড়ি করে পিজি হাসপাতালে পাঠান রোগীকে। অস্ত্রোপচারের পর বাচ্চাটি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যায়। কৃতজ্ঞতায় বাচ্চাটির বাবা ফেসবুক লাইভ করে আনন্দ সরকারের এহেন উপকারের জন্য ধন্যবাদ জানান। কিন্তু তখনও আনন্দবাবু জানেন না তাঁর জীবনে আসতে চলেছে বড়সড় পরিবর্তন।
আগের ঘটনা ছিল জুন মাসে। আর তারপরই জুলাই মাসে আনন্দ সরকারকে দল থেকে বহিস্কার করে স্থানীয় তৃণমূল ব্লক সভাপতি আমিরুল ইসলাম গাজী। তবে এর পিছনে ঠিক কোন কারণ তা নিয়ে তৈরি হয় ধোঁয়াশা। একুশে জুলাইয়ের আগে এহেন পদক্ষেপে ভেঙে পড়েন আনন্দ। বহিষ্কারের পরও নিজের অনুগামীদের সঙ্গে নিয়ে একুশে জুলাই সমাবেশে যোগ দেন আনন্দ। এই ঘটনায় তোলপাড় চলে হাসনাবাদের রাজনৈতিক মহলে।
সমাজসেবাকে কেন্দ্র করে দলের পুরোনো নেতাকে বহিষ্কারের ঘটনা কানে এসে পৌঁছয় দলের শীর্ষ নেতৃত্বের। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের এমন বহিঃপ্রকাশে স্তম্ভিত হয়ে যান তৃণমূল ভবনের নেতারা। খোঁজ-খবর নেওয়া হয়েছে বিধায়কের কাছ থেকেও। যদিও বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল সমাজসেবার কারণে আনন্দ সরকারের বহিষ্কারে তত্ত্ব স্বীকার করেননি। তাঁর দাবি, পিছনে কাজ করছে ব্লক সভাপতির সঙ্গে আনন্দর দীর্ঘ দ্বন্দ্ব। তাঁর স্পষ্ট কথা, বহিষ্কার চূড়ান্ত করবে দলের শীর্ষ নেতারাই। অন্যদিকে আমিরুল ইসলাম গাজী যদিও সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি এর পিছনে সমাজসেবা সংক্রান্ত কোনও বিষয়ই নেই। বলছেন, “আনন্দ আসলেই দলবদলু। বহুবার দল পাল্টেছে। কাউকে মানত না, বিধায়কেও মানত না। ও বহু দিন থেকেই তৃণমূল বিরোধী। তবে করাও চিকিৎসা করানোর জন্য কিছু হয়নি।”
