উত্তর ২৪ পরগনা: বন্ধুবান্ধবীদের সঙ্গে ছবি তোলার জন্য রেলব্রিজের ধারে গিয়েছিল। আচমকাই নদীতে ঝাঁপ কিশোরের। ১৮ ঘণ্টা পর নদী থেকে উদ্ধার কিশোরের দেহ। সঙ্গে থাকা বান্ধবীর বক্তব্য শুনতে পেয়েছিল একটা বিশেষ শব্দ আর তা শুনেই কিছু না ভেবেই কিশোর ঝাঁপ দেয় নদীতে! চাঞ্চল্যকর ঘটনা উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অচিন্ত্যপল্লির ঘটনা। মৃত কিশোরের নাম বিশ্বজিত্ সরকার।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলা গোবরডাঙ্গা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের অচিন্ত্যপল্লি এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ সরকার ছেলে বিশ্বজিৎ দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় রেল ব্রিজের উপর কয়েকজন বন্ধু বান্ধবীর সঙ্গে ছবি তোলার জন্য যায় বিশ্বজিত্।
তার সঙ্গে থাকা বন্ধুরা জানাচ্ছে, ছবিই তুলছিল বিশ্বজিত্। গল্পও করছিল। আচমকাই ট্রেন আসার শব্দ শুনতে পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে সে। কিছু না বুঝেই যমুনায় ঝাঁপ দেয়। ঘটনার আকস্মিকতায় প্রথমে স্তম্ভিত হয়ে পড়ে বাকি বন্ধুরা। পরে তারাই স্থানীয় ও জিআরপিকে খবর দেন।
এরপর থেকেই খোঁজাখুঁজি শুরু করে জিআরপি ও গোবরডাঙ্গা থানার পুলিশ। যমুনায় রাতেই ডুবরি নামানো হয়। অনেক চেষ্টার পরেও উদ্ধার হয়নি মৃতদেহ। অন্ধকারে উদ্ধারকার্যে সমস্যা হচ্ছিল। এরপর সোমবার সকাল থেকে ফের ডুবুরি নামিয়ে বিশ্বজিৎ সরকারের খোঁজাখুঁজি করা হয়। প্রায় ১৮ ঘন্টা পরে মৃতদেহ উদ্ধার হয় বিশ্বজিতের।
গোবরডাঙা রেল ব্রিজের কাছে প্রতিনিয়ত কিশোর-কিশোরীরা ছবি তোলার জন্য ভিড় করে। এলাকাবাসীরা বারবার তাদের সচেতনও করেন। কিন্তু এটা নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে উঠেছে। এর আগেও ওই এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে। জিআরপি আধিকারিকরা একাধিকবার সচেতন করলেও ছেলেমেয়েরা বারংবার এখানে ছুটে আসে বলে দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয় এক দোকারদার বলেন, “ওই ছেলেটা ইদানীং এই এলাকায় আসাযাওয়া শুরু করেছিল। লকডাউনের সময় থেকেই এই রেলব্রিজের ওপর বাচ্চা ছেলেমেয়েদের আড্ডাটা বেড়ে গিয়েছে। ছেলেটাকে বারণ করেছিলাম। সন্ধ্যার পর ওখানে যাওয়াটা রিস্ক। এর আগেও দুর্ঘটনা ঘটেছে ওই এলাকায়। ছেলেটার সঙ্গে একটা মেয়েও ছিল। দুটো ট্রেন গেল, একটা আপ আরেকটা ডাউনে। তারপরই মেয়েটা দৌড়ে এসে কান্নাকাটি করতে থাকল। আমরা সবাই জড়ো হয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু অন্ধকারে বিশেষ কিছু জানা যায়নি।”
ছেলেটির বাবা বলেন, “আমি আমার ছেলের মুখ দেখতে পাইনি। আমার আর কিচ্ছু বলার নেই। কাল বিকাল পাঁচটার থেকে খোঁজ মিলছিল না। আমি যেতে বারণই করেছিলাম।”
পুলিশ জানিয়েছে, অন্ধকার হয়ে আসাতেই তল্লাশিতে দেরি হচ্ছিল। তাছাড়াও ওই অংশ কচুরিপানায় ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। তাতে উদ্ধারকাজ আরও ব্যাহত হয়েছিল। তাই উদ্ধারে দেরি হয়। এই ঘটনার পর ওই এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: Diamond Harbour Fraud Case: চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা, ফের পুলিশের জালে ১