বাগদা : বিভিন্ন ইস্যুতে সমস্যায় জর্জরিত শাসক শিবির। এবার সেই অস্বস্তি আরও বাড়ল বাগদার এক প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগে। কিছুদিন আগেই বাগদার পাটকেল পোতা প্রাথমিক স্কুলের নতুন ভবন তৈরির জন্য টাকা এসেছে। বাগদার ব্লক আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে প্রায় ১১ লাখ টাকা খরচ করে তৈরি হচ্ছে ওই নতুন ভবনটি। এবার সেই স্কুল ভবন তৈরির জন্য নাকি কাটমানি চাওয়া হচ্ছে। এমনই অভিযোগ তুলেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ, আশরাফুল মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। টাকার জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষককে ঘিরে ধরে গালিগালাজ এবং মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। স্থানীয় সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই আশরাফুল মণ্ডল তৃণমূলের স্থানীয় যুব নেতা গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলের সহযোগী। আর এই নিয়েই জোর শোরগোল শুরু হয়েছে এলাকায়।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বিকেলে। অভিযোগ, স্কুল থেকে ফেরার পথে সুকুমার সর্দার নামে ওই প্রধান শিক্ষকের পথ আটকায় আশরাফুল। শুরু হয় গালিগালাজ। স্কুলের ওই ভবনটির জন্য কাটমানির দাবি করে সে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক টাকা দিতে অস্বীকার করলে, তাঁকে রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর আহত অবস্থায় রাস্তাতেই পড়ে ছিলেন। এরপর স্কুলের অন্যান্য শিক্ষক এবং সুকুমার বাবুর পরিবারের লোকেরা তাঁকে উদ্ধার করে বাগদার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। আপাতত বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন প্রধান শিক্ষক। ভয়ে এখন আর তিনি স্কুলে যেতে চাইছেন না।
এদিকে ঘটনাটি নিয়ে ইতিমধ্যেই ব্লক ডেভেলপমেন্ট আধিকারিক এবং স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। বিষয়টি জানানো হয়েছে জেলা স্কুল পরিদর্শককেও। ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে বাগদা থানার পুলিশ। ঘটনার পর থেকে এলাকা থেকে পলাতক অভিযুক্ত আশরাফুল। তবে পলাতক অভিযুক্ত যে গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করা হচ্ছে, তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, আশরাফুল তাঁর অনুগামী নয়। তবে সে যে তৃণমূলের কর্মী, সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন গিয়াসউদ্দিন। কিন্তু ঘটনায় কাটমানির কোনও যোগ নেই বলেই দাবি তাঁর। তাঁর বক্তব্য, স্কুলের কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছিল এবং সেই নিয়েই সমস্যা।
ঘটনার পর স্থানীয় আষারু গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান তুষার কান্তি বিশ্বাস বলেন, “প্রধান শিক্ষক পঞ্চায়েতে একটি লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন, তাঁকে মারধর করা হয়েছে। শিক্ষককে মারধরের ঘটনা দল কোনওমতেই মেনে নেবে না। পুলিশ প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।”