Partha Bhowmik-Arjun Singh: অর্জুনের কাটা ঘায়ে ‘মলম’ লাগালেন পার্থ
Partha Bhowmik: পার্থর উত্তর, "আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখের উপর কখনও না বলিনি। অর্জুনকে টিকিট দিলে ১০০ বার ওনার হয়ে কাজ করতাম। আমি তো বলেছিলাম নৈহাটিতে লিড দেওয়ার দায়িত্ব আমার। ও জানে সেটা। প্রার্থী হওয়ার পরও আমি কথা বলেছি ওর সঙ্গে। ও বলেছে 'তুমি হয়েছ আমি খুশি হয়েছি। তুমি পলিটিক্যাল ছেলে। তোমার ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই'। আমি বললাম ওর বাড়ি যাব।"

ব্যারাকপুর: তৃণমূল প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতেই ব্যারাকপুর কেন্দ্রকে সামনে রেখে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। পার্থ ভৌমিককে এই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে দল। আর তারপরই অর্জুন সিং বোমা ফাটিয়েছেন, তাঁকে ব্যারাকপুরে টিকিট দেওয়ার আশ্বাস দিয়েই তৃণমূলে ফেরানো হয়েছিল। এমনটা হবে জানলে তিনি তৃণমূলে ফিরতেন না। টিকিট না পাওয়া নিয়ে রবিবারই অর্জুন সিং দাবি করেছেন, এর পিছনে পার্থ ভৌমিকের ভূমিকা রয়েছে। পার্থ-ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত কয়েকজন বিধায়কের প্রবল বিরোধিতায় তিনি টিকিট পাননি বলেও দাবি করেন। তবে টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে পার্থ ভৌমিক জানান, “দল মনে করেছে ব্যারাকপুর আসনটায় আমার দাঁড়ানো উচিত। তাই দাঁড়িয়েছি। দল অন্য দায়িত্ব দিলে সেটাও পালন করতাম।”
কিন্তু এই আসনে অর্জুন সিং কাঁটা হবে না তো? প্রশ্ন শুনেই পার্থর জবাব, “ব্যারাকপুরের মানুষ যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আছেন, ২০২১-এ মানুষ তা প্রমাণ করে দিয়েছেন। আর ব্যক্তিগতভাবে অর্জুন সিং কোনওদিনই আমার শত্রু ছিলেন না। ও বিজেপিতে চলে গিয়েছিল। আমি তৃণমূলের হয়ে লড়াই করেছি। সেই লড়াইকে শত্রুতা বললে বলব দলগতভাবে শত্রুতা করেছি। আর এখানে মমতা-ইজমই চলবে। এর বাইরে কিছু চলবে না। এখানে পার্থ ভৌমিকের কোনও জমিদারি নেই। কোনও ব্যক্তিরই কোনও জমিদারি চলবে না।” একইসঙ্গে অর্জুনের কাটা ঘায়ে ‘মলম’ লাগানোর চেষ্টাও করলেন পার্থ ভৌমিক। বললেন, “এক সময় আমি মন্ত্রী ছিলাম ও এমপি, এবার হয়ত আমি এমপি হয়ে যাব। ওরও তো সুযোগ আছে মন্ত্রী হওয়ার। ও কেন সেই সুযোগ ছেড়ে অন্য দলে যাবে?”
এরপরই পার্থ বলেন, “ভবিষ্যতে হতেও তো পারে। আমি তো জানতাম না আমাকে প্রার্থী করবে। তেমনই ও তো জানে না দল ওকে নিয়ে কী ভাবছে?” প্রসঙ্গত, মমতা রবিবারই বলেছেন, যাঁরা টিকিট পেলেন না, তাঁদের নিয়ে দল ভাবনাচিন্তা করবে। অন্য কোথাও যুক্ত করারও ভাবনা চিন্তা করছে।
তবে পার্থ মানছেন, অর্জুন সিং নিয়ে বিরোধিতা এখানে ছিলই। আর দলও তা গুরুত্ব দিয়েই বিচার করেছে। পার্থর দাবি, সোমনাথ শ্যাম, সুবোধ অধিকারীর পাশাপাশি ব্যারাকপুরের বিধায়ক রাজ চক্রবর্তীও মন থেকে অর্জুনের প্রত্যাবর্তন মানতে পারেননি। বিশেষ করে সুবোধ ও সোমনাথ। তাঁরা প্রবল বিরোধিতা করেন। পার্থর কথায়, “দল দেখল এতগুলো বিধায়ক বিরুদ্ধে। এই লোকটাও প্রথম দিন থেকে দল করেছে। দলের দুঃসময়েও ছিল। দল ছাড়ার কথা কখনও চিন্তাও করেনি। তাহলে এই লোকটাকেই দাঁড় করিয়ে দিই।”
কিন্তু অর্জুনকে নিয়ে যদি এতই বিরোধিতা তা অর্জুনকে দলে ফেরানোর সময় কেন মনে হয়নি? কেন তখন বিরোধিতা করেননি? পার্থর উত্তর, “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখের উপর কখনও না বলিনি। অর্জুনকে টিকিট দিলে ১০০ বার ওনার হয়ে কাজ করতাম। আমি তো বলেছিলাম নৈহাটিতে লিড দেওয়ার দায়িত্ব আমার। ও জানে সেটা। প্রার্থী হওয়ার পরও আমি কথা বলেছি ওর সঙ্গে। ও বলেছে ‘তুমি হয়েছ আমি খুশি হয়েছি। তুমি পলিটিক্যাল ছেলে। তোমার ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই’। আমি বললাম ওর বাড়ি যাব।”
এদিকে অর্জুন টিকিট না পাওয়ার পরই জোর জল্পনা শুরু হয়েছে ব্যারাকপুরে, আবারও বোধহয় বিজেপিতেই ফিরতে চলেছেন অর্জুন সিং। অর্জুন অবশ্য বলেছেন, এ নিয়ে কোনও ভাবনাচিন্তা এখনও তিনি করেননি। আর পার্থর বক্তব্য, এত ঘন ঘন দল বদল করলে লোকে তা ভাল চোখে দেখে না। বলেন, “আশা করব নিশ্চয়ই থাকবে। কারণ বারবার দল বদলালে তো লোকে ভাল করে নেয় না। লোকেও খারাপ চোখে দেখে। আমার ধারণা আমার বন্ধু এ ভুল করবে না।”
