উত্তর ২৪ পরগনা: অনেক দিন ধরেই সন্দেহ করছিলেন পড়শিরা। বাড়ির লোকের মনেও সন্দেহ দানা বেঁধেছিল। কানাঘুষো চলছিলই, কিন্তু কখনই হাতেনাতে ধরতে পারছিলেন না। ওঁত পেতে ছিলেন বাড়ির লোক। শেষমেশ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মিলেছিল সুযোগ। বাড়িতে কেউ ছিলেন না। সেই সুযোগে প্রেমিকাকে ঘরে ঢুকিয়েছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের যুবক। দরজা বন্ধই ছিল। কিন্তু জানলার ছিটকিনি আটকাতে কোনওভাবে ভুলে গিয়েছিলেন। বাইরে থেকে নজর রেখেছিলেন পড়শিরা। কিন্তু দৃশ্য দেখে লজ্জায় নিজেরাই সরে যান। পরে পাড়ার অনেক লোক জড়ো হয়েই দরজায় টোকা, বাইরে থেকে চিৎকার। বাধ্য হয়ে দরজা খুলতেই একসঙ্গে দুজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু তারপরের ঘটনা ‘নক্কারজনক।’ বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ‘শাস্তি’ দিতে মধ্যযুগীয় বর্বরতা চালানোর অভিযোগ উঠল এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে। মহিলার চুল কেটে যুবককে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ উঠল পড়শিদের বিরুদ্ধে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বামুনগাছি রেল কোয়ার্টার এলাকায়।
জানা যাচ্ছে, কোয়ার্টারের পাশের এলাকাতেই এক পরিবারের জামাইয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক হাতে নাতে ধরে ফেলেন এলাকাবাসীরা। ওই ব্যক্তির বউই আগে থেকে গ্রামের লোকদের বলে রেখেছিলেন গোটা বিষয়টি। ফাঁকা বাড়িতে যে মুহূর্তে স্বামীর ঘরে অন্য মহিলা ঢুকে পড়েন, ঠিক তখনই জানলার পাশে দাঁড়িয়ে যান প্রতিবেশীরা। তাঁরা যখনই ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করেন, তখনই দরজায় আওয়াজ করতে থাকেন প্রতিবেশীরা। দরজা খুলতেই ওই ব্যক্তির স্ত্রী হুড়মুড়িয়ে ঘরে ঢুকে যান।
অভিযোগ, ওই ব্যক্তির স্ত্রী মহিলার চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে বাইরে নিয়ে আসেন। এরপর সকলেই চড়াও হন তাঁর ওপর। কাঁচি দিয়ে চুল কেটে দেওয়া হয়। সেই দৃশ্য মোবাইল বন্দি করেন অনেকে। বাচ্চাগুলো আবার সে দৃশ্য দেখে আনন্দে নাচতেও থাকে। একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তাতেই গোটা দৃশ্য ধরা পড়েছে। ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি TV9 বাংলা।
এদিকে, বেপরোয়া কিল-চড়-ঘুষি চলতে থাকে ওই ব্যক্তির ওপর। অভিযোগ, দুজনের ওপর ঘণ্টা চারেক ধরে চলে অত্যাচার। ততক্ষণে খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় পুলিশ। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক কিংবা গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, এ ধরনের একটা ঘটনা ঘটেছে। আক্রান্তদের উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এক এলাকাবাসী বলেন, “কী বলব বলুন তো, মানুষ ক্ষেপে গিয়েছে। বাড়িতেই এসব করছে। বউটার কথা ভাবেনি। বউটাও এখানকারই মেয়ে। সবার রাগ বেরিয়ে এসেছে তাতেই।”