উত্তর ২৪ পরগনা: ধনের সঙ্গে মেশানো হচ্ছে সোনালি রঙ। যা অত্যন্ত ক্ষতিকারক কেমিক্যাল। ঘটনার তদন্তে যত এগোচ্ছেন, ইডি (ED) আধিকারিকদের হাতে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গত অগস্টে মাসে কলকাতার পোস্তার একটি দোকান থেকে ১১ বস্তা ধোনে আটক করে ইনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ। তদন্তে দেখা যায়, সেই ধোনে গুলি উদ্ধার হয়েছে, তাতে মেশানো রয়েছে সোনালি রঙ।
ল্যাবে পরীক্ষা করার পর জানা যায়, যে রঙ মেশানো হয়েছে, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। সেই মতো গত ৩০ সেপ্টেম্বর এটি মামলা শুরু করেন ইডি আধিকারিকরা। তদন্তে নেমে উঠে আসে উত্তর ২৪ পরগনার এক ব্যক্তির নাম। গ্রেফতার করা হয় পল্টন সাহা নামে এক ব্যক্তিকে।
নকল রান্নার মসলা প্রস্তুতকারক ও বড় বাজারের ব্যবসায়ীকে পল্টন সাহাকে গ্রেফতার করে কলকাতার পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের অফিসারেরা। বেলঘরিয়া এনকে মুখার্জি স্ট্রিটের বাসিন্দা পল্টন সাহাকে লাগাতার জেরা করতে থাকেন আধিকারিকরা। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ধনে মসলায় কেমিক্যাল জাতীয় জিনিস দিয়ে বাজারে বিক্রি করতেন। জেরায় পল্টনের কাছ থেকেই উঠে আসে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরার বাসিন্দা জীবন বনিকের নাম।
পল্টনকে গ্রেফতার করে উঠে আসে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযুক্ত পল্টন সাহার থেকেই হদিশ পায় হাবরা থানা এলাকায় তৈরি হচ্ছে সোনালী রঙের ধনে। সেই মতো কলকাতা পুলিশের এক বিশেষ দল ও ইডি আধিকারিকরা অভিযান চালায়। হাবরা থানা পুলিশের সঙ্গে হাবরা কইপুকুর আকরামপুর এলাকায় অভিযান চালান তদন্তকারীরা।
ওই এলাকাতেই বাড়ি জীবন বণিকের। বাড়িতে হানা দেয়। অভিযুক্ত জীবন বণিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১৬৩ বস্তা ধোনে। যার মধ্যে ১৪০ বস্তা দুটি গোডাউনে সোনালি রঙ করা ধনে ছিল। ওই ধনে বস্তায় ভরে গোডাউনে রেখে দিয়েছিলেন জীবন। পরে তদন্তের হাতে থেকে বাঁচতে তাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন. আগুন জ্বালিয়ে গোডাউন সিল করে রেখেছিলেন জীবন। এক একটি বস্তায় ৪৫ কিলো ধনে মজুত আছে বলে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্ত জীবন বণিককে আটক করেন ইডি আধিকারিকরা।
অভিযুক্তর বাড়িতেই একটি গোডাউন রয়েছে। সেখানে তল্লাশি চালান ইডি আধিকারিকরা। সেখান থেকে উদ্ধার হয় গন্ধক ৩২ কিলো ৫০০ গ্রাম, প্লাস্টিকের স্প্রে, সেলাই করার মেশিন ১ টি ও ওজন মাপার যন্ত্র।
জীবনকে লাগাতার জেরা করতে চান তদন্তকারীরা। তাঁদের অনুমান, এই জীবন নিজে একা চক্র চালাতেন না। এর সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। ভেজাল মশলা চক্রের সঙ্গে আর কে কে জড়িত, কোথায় কোথায় এই মশলা সরবরাহ করা হত, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: EarthQuake: পুজোর শুরুতেই ভূমিকম্পের ধাক্কা বঙ্গে, মধ্যরাতে কেঁপে উঠল একাধিক জেলা