‘ওদের মারে আমার বউটা শেষমেশ মারাই গেল’, স্রেফ একটা মিথ্যায় জ্বলল গোটা গ্রাম!

TV9 Bangla Digital | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Aug 31, 2021 | 8:54 AM

North 24 Parganas: অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হালিমা বিবির পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে।

ওদের মারে আমার বউটা শেষমেশ মারাই গেল, স্রেফ একটা মিথ্যায় জ্বলল গোটা গ্রাম!
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

উত্তর ২৪ পরগনা: পিটিয়ে মারা হয়েছে তাঁর স্ত্রীকে। হাসপাতাল থেকে এসেছে তাঁর মৃত্যুর খবর। গ্রামে স্ত্রীর মৃত্যুর ‘গুজব’ ছড়ান স্বামী। গুজবে তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা গ্রাম। অভিযুক্তের বাড়িতে চলে বেপরোয়া ভাঙচুর, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় টোটো-বাইকেও। এক মহিলার মৃত্যুর গুজবে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় দত্তপুকুরের (Duttapukur) কদম্বগাছি কাঠালিয়া গ্রাম। পরিস্থিতি সামলাতে নামানো হয় র্যাফ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাঠালিয়া গ্রামের বাসিন্দা হালিমা বিবির সঙ্গে তাঁর প্রতিবেশী রাজু মন্ডলের বেশ কয়েকদিন আগে সংঘর্ষ হয়। সেটা নিতান্তাই পারিবারিক একটি বিষয় ছিল। সে সময় হালিমা বিবির ছেলেকে রাজু মন্ডল মারধর করেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হন হালিমা বিবি।

রাজু মন্ডল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা হালিমা বিবিকে এলোপাথাড়ি মারধর করেন বলে অভিযোগ। গ্রামেরই পরিত্যক্ত এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় হালিমা বিবিকে উদ্ধার করেন গ্রামবাসীরা। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হালিমা বিবির পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে।

অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করে পুলিশ। সোমবার সন্ধ্যা আটটা নাগাদ হালিমা বিবির স্বামী তাজাফার আলি মন্ডল গুজব ছড়ান, তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আর তখনই গ্রামবাসীরা অভিযুক্ত রাজু মণ্ডলের বাড়িতে ভাঙচুর চালান। একটি মোটরবাইকেও ভাঙচুর চালানো হয়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় রাজুর বাড়ির একাংশও।  ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। রণক্ষেত্রে চেহারা নেয়। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যে এলাকায় র্যাফ নামাতে হয়।

খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দত্তপুকুর থানার পুলিশ। গুজব ছড়ানোর ফলে এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে হালিমা বিবির স্বামীকে গ্রেফতার করেছে দত্তপুকুর থানা পুলিশ।

এক গ্রামবাসীর কথায়, “হালিমা বিবির সঙ্গে একান্তই পারিবারিক বিবাদ হয়েছিল। ঝামেলায় হাতাহাতি হয়। আক্রান্ত হালিমা বিবি হাসপাতালে ভর্তি হন। হঠ করে কেউ বলল যে, ওঁর মৃত্যু হয়েছে। গুজবে গ্রাম উত্তাল হয়ে ওঠে। আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর করেন, বাইক জ্বালিয়ে দেন। পরে জানা যায় সবটাই গুজব। মহিলার স্বামীই এই গুজব ছড়িয়েছেন।”

হালিমা বিবির স্বামী বলেন, “আমার বাচ্চা নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। রাজু বউ ফোন করে রাজুকে ডেকে আনে। ওরাই আমার বাচ্চা-বউয়ের ওপর হামলা করে। আমার বাচ্চা ছেলের গায়ে টোটো তুলে দিতে যায়। আমার বউয়ের মাথা ফাটিয়ে দেয়। অবস্থা খুবই খারাপ। পুলিশকে প্রথমেই সব জানাই। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি। বড়বাবুর টেবিলে দুদিন ধরে কাগজ পড়ে রয়েছে।” ওই ব্যক্তির কথায়, “প্রথমে হাসপাতাল থেকেই ফোন এসেছিল যে ও নেই। পরে শোনা যায় আরজিকর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।” এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধেই গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। উল্টে গ্রামে গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে তাঁকেই পাল্টা গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আরও পড়ুন: ‘নিয়ম মেনে বদলির তালিকা তৈরি করে পাঠাতাম নবান্নে, ফিরত চলে আসত’, কীসের ইঙ্গিত একদা স্বাস্থ্য অধিকর্তার?

Next Article