কলকাতা: নয়া পুরসভা প্রশাসক মণ্ডলীর বেশ কয়েকজন পদাধিকারীকে নিয়ে না-খুশ ছিল তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। বিক্ষোভ শুরু হয় পানিহাটি, গোবরডাঙ্গা ইত্যাদি পুরসভা এলাকায়। সেই ক্ষোভের মুখে পড়ে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বদলে গেল পুর প্রশাসকদের নাম! মঙ্গলবারই নয়া নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের তরফে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২৫টি পুরসভায় নতুন করে প্রশাসকমণ্ডলী নিয়োগ করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আর তার পর থেকেই পানিহাটি এলাকায় রাজনৈতিক তরজা কার্যত তুঙ্গে ওঠে। কারণ, কৌশিক চ্যাটার্জি। প্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে যে কৌশিককে, ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে তিনি বিজেপিতে চলে যান। এমনকি বিজেপির হয়ে চিফ ইলেকশন এজেন্টের ভূমিকাও পালন করেন। কিন্তু ভোট মিটতে আবারও তৃণমূলে ফিরে আসা সেই কৌশিকেই আস্থাশীল হয় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় তৃণমূল শিবিরে। বিষয়টি নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন পাানিহাটির তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষও। বলেন, শীঘ্রই এ নিয়ে শীর্ষ নেতৃত্বকে জানাবেন। এই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিকালের মধ্যেই বদল এল একাধিক পুর প্রশাসকের তালিকায়।
পানিহাটি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে কৌশিককে সরিয়ে আনা হল সোমনাথ দে-কে। বদল এল গোবরডাঙ্গা, বসিরহাট ও হাবড়া পুর প্রশাসকের পদেও। হাবড়া পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীতে সংযুক্ত হলেন শঙ্কর প্রসাদ সরকার, তাপস চ্যাটার্জি, সীতাংশু দাস, কাঞ্চন ঘোষ। গোবরডাঙ্গা পুরসভার পুরপ্রশাসক থেকে বাদ গেলেন তুষার কান্তি ঘোষ। তাঁর জায়গায় বসানো হল সমীর নন্দীকে।
উল্লেখ্য, পানিহাটির রাজনীতিতে কৌশিক চ্যাটার্জি ওরফে ভোলা নির্মল ঘোষের বিরোধী শিবির বলে পরিচিত। ভোলাবাবুর দিদিও কাউন্সিলর। উল্টোদিকে তৃণমূলের দমদম-বাারকপুর সাংগঠনিক চেয়ারম্যান নির্মল ষোষের মেয়েও কাউন্সিলর। পানিহাটিতে কান পাতলেই শোনা যায় ঘোষ বনাম চ্য়াটার্জির দ্বন্দ্বের কথা। সেই ঘোষ পরিবারকে শায়েস্তা করতে কি বিজেপি নেতা সজলের হয়ে সওয়াল করা কৌশিকেই ভরসা করছে তৃণমূল? এমনই প্রশ্ন উঠছিল দলেরই অন্দরে। বিষয়টি নিয়ে ‘অবাক’ পানিহাটির বিধায়ক নির্মল ঘোষ জানান পুরো বিষয়টি নিয়ে তিনি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে প্রশ্ন রাখবেন। অন্যদিকে গোবরডাঙ্গাতেও শুরু হয়েছিল বিক্ষোভ। এর মধ্যেই নয়া পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর নাম পেস করল রাজ্যের পুর দফতর।
প্রসঙ্গত, কলকাতা সহ শতাধিক পুরসভার ভোট বাকি রয়েছে। কোভিডের কারণে দিনক্ষণ ঘোষিত হওয়ার পরেও তা বাতিল হয়ে যায়। সেই থেকেই রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় নিত্যদিনের কাজকর্ম চালাচ্ছেন রাজ্য সরকারের দ্বারা নিযুক্ত প্রশাসকমণ্ডলী। এদিন রাজ্য সরকারের তরফে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার ২৫টি পুরসভায় নতুন করে প্রশাসকমণ্ডলী নিয়োগ করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। আর তার পর থেকেই পানিহাটি এলাকায় রাজনৈতিক তরজা কার্যত তুঙ্গে ওঠে। কারণ, সেখানে প্রশাসকমণ্ডলীর ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে ভোটের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে যাওয়া ও ভোট মিটতে আবারও ফিরে আসা নেতা কৌশিক চ্যাটার্জিকে। আর এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয় তৃণমূল শিবিরে। আরও পড়ুন: শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কৌশিক কেন ভাইস চেয়ারম্যান? পানিহাটিতে তুঙ্গে ঘোষ-চ্যাটার্জি দ্বৈরথ