Panihati: সরকারি হাসপাতালের বেডের নীচে জল থইথই, ভাসছে ময়লা কাপড়, ফেলে দেওয়া সিরিঞ্জ!
North 24 Pargana: মঙ্গলবার সকাল থেকে দেখা যায়, হাসপাতালের সমস্ত ওয়ার্ড ডুবেছে জলে। হাঁটু সমান জলের মধ্যেই ওয়ার্ড পরিদর্শন করছেন চিকিত্সক ও নার্সরা।
উত্তর ২৪ পরগনা: ভাদ্র-ধারাপাতের জেরে প্রায় বানভাসি বঙ্গ। জলমগ্ন একাধিক এলাকা। রবিবার রাত থেকেই চলছে বজ্রবিদ্যুত্-সহ বৃষ্টি। সোমবার সারারাত ধরে অবিরাম ধারাপাতে এ বার জলমগ্ন পানিহাটির স্টেট জেনারেল হাসপাতাল (Panihati State General Hospital)। এমনিতেই বৃষ্টির জেরে বিগত দিন-দুই ধরে পানিহাটির বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। এ বার জলপ্রবেশ করেছে সরকারি হাসপাতালের মধ্য়েও। জল থইথই হাসপাতালের মধ্যেই চলছে রোগীর পরিষেবা।
মঙ্গলবার সকাল থেকে দেখা যায়, হাসপাতালের (Panihati State General Hospital) সমস্ত ওয়ার্ড ডুবেছে জলে। হাঁটু সমান জলের মধ্যেই ওয়ার্ড পরিদর্শন করছেন চিকিত্সক ও নার্সরা। অসুবিধায় পড়ছেন রোগী ও তাঁদের পরিজনরা। অভিযোগ, বারবার বলা সত্ত্বেও প্রশাসন উদাসীন। জল নিষ্কাশনের কোনও ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। ওই জলের মধ্যেই ভাসছে হাসপাতালের ময়লা কাপড়, আবর্জনা, ফেলে ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ। জ্বরাতঙ্ক যখন বঙ্গ জুড়ে, পাশাপাশি বাড়ছে মশাবাহিত ডেঙ্গুর দাপট তখন হাসপাতালের মধ্যেই জমা জলে থাকতে গিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত রোগীরা।
এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক নেতারা কেবল ভোটের সময় ভোট চাইতে আসেন। ভোট মিটলেই আর তাঁদের দেখা যায় না। বারবার বিধায়ক-শাসক শিবিরকে অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। জল কখন নামবে তাও অনিশ্চিত।
জলযন্ত্রণার জেরে বিক্ষুব্ধ এক রোগীর কথায়, “হাসপাতালের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। বেডের নীচে পুরো জল থইথই। সমস্ত ময়লা ওয়ার্ডের মধ্যেই ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে। জল পেরিয়ে বাথরুম যাচ্ছে। এসে আবার পা মুছে নিতে হচ্ছে। রাতের বেলা জোক, পোকামাকড়, সাপ, কেঁচো ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা আর কী করব! এইভাবেই কাজ চলছে।”
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বারবার পানিহাটি পুরসভায় চিঠি লিখেও কোনও লাভ হয়নি। অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু, সরকারিভাবে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। ফলে বৃষ্টি হলেই এই ভোগান্তি। যদিও, এই ঘটনায় পানিহাটি পুরসভা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
শুধু পানিহাটি হাসপাতালেই নয়, জলযন্ত্রণা দেখা দিয়েছে খাস কলকাতার এসএসকেএমেও। ভারী বৃষ্টি হলেই এসএসকেএম হাসপাতালে জলযন্ত্রণার চিত্রটা প্রকট হয়ে ওঠে। এর আগেও একাধিকবার এরকম অভিযোগ উঠেছে। টানা বৃষ্টি হলেই গাইনেকোলজি ব্লকের ম্যাটারনিটি ওয়ার্ড, বহির্বিভাগ ও মেইন ব্লকের এক তলায় জলমগ্ন হয়ে পড়ার নমুনা আগেও দেখা গিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য পুরনো দাবি, হরিশ মুখার্জি রোডে ওই জল যাওয়ার জন্য যে পিটগুলি রয়েছে, ভারী বৃষ্টি হলে তা পরিষ্কার করেও লাভ হয় না। পাম্পিং স্টেশনগুলি জল টানতে না পারায় এই সমস্যা হয়।
রবিবার রাতভর যে পরিমাণ বৃষ্টি শহর কলকাতায় হয়েছে তাতে এমন অবস্থা হওয়া যে ভবিতব্য তেমনটাই মনে করছেন এলাকাবাসী। শহরের লকগেটগুলি বন্ধ। ফলে জল নিকাশির কোনও পথই খোলা নেই। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তারক সিং জানিয়েছেন, ” শহরের নালাগুলি টইটম্বুর। উপচে পড়ছে জল। লকগেট বন্ধ। এটা না খুললে তো জল নামবে না। ড্রেনেজের জল যে খালে পড়ে তাও ভর্তি। আমাদের সিস্টেম নেটওয়ার্ক পুরো কাজ করছে। ৭৬টা পাম্পিং স্টেশন চলছে। ৪০৮টা পাম্প রয়েছে। যত গুলো পাম্প চালানোর প্রয়োজন রয়েছে সেগুলি সব চলছে। সাড়ে ৪০০ পোর্টেবল পাম্প বিভিন্ন জায়গায় প্রস্তুত। কিন্তু মূল সমস্যা হচ্ছে যেখানে গিয়ে নিকাশী জল পড়বে সেই খালই তো ভর্তি।”
আরও পড়ুন: Dev: ‘বাবুলদা আজ আমাদের দলে, কাল…’, বলেই থামলেন তারকা-সাংসদ!
আরও পড়ুন: Jitendra Tiwari: জল্পনায় জল, শুভেন্দুর সঙ্গে কর্মিসভায় জিতেন্দ্র, নির্বাচনে লড়তে চ্যালেঞ্জ বাবুলকে