উত্তর ২৪ পরগনা: পানিহাটি ভ্যাকসিন কাণ্ডে (Panihati Vaccine case) অভিযুক্ত চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্রকে (Biplab Rudra) পুরসভার মেডিক্যাল অফিসার পদ থেকে অপসারিত করা হল। তবে ওই চিকিত্সক ভ্যাকসিন কোথা থেকে জোগাড় করেছিলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ঘটনায় পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি পুরসভার তরফেও তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
এপ্রসঙ্গে বিধায়ক এবং মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষ বলেন, “পুলিশ গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। কীভাবে চিকিত্সক টিকা পেলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশ এখনও কিছু উদ্ধার করতে পারেনি। তবে পুরসভা এর সঙ্গে যুক্ত নয়। অকারণ গুলিয়ে লাভ হবে না।”
অন্যদিকে, পানিহাটি প্রশাসক মন্ডলীর সদস্য সোমনাথ দে বলেন, “অভিযুক্ত চিকিৎসক বিপ্লব রুদ্রকে পুরসভার মেডিক্যাল অফিসার পদ থেকে থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। কীভাবে কার কাছ থেকে কত প্যাড নিয়েছেন আর কী কাজে লাগিয়েছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
তবে তিনি জানাম, একটা ভাওয়াল থেকে ১০ জনকে টিকা দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ১১ কিংবা ১২ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছিল কিনা, তা দেখা হবে, সেখান থেকেই টিকা সরানো হচ্ছিল কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পানিহাটি টিকা চক্রের পর্দাফাঁস হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অভিযুক্ত পুর চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্রকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় খড়দহ পুলিশ। কিন্তু শনিবার রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। জেলাশাসক নিজেই জানিয়েছেন, পানিহাটি ভ্যাকসিন কাণ্ডে অভিযুক্ত চিকিৎসক নাকি থানায় গিয়ে নিজের প্যাডে লিখিত বয়ান দিয়েছেন। অভিযুক্ত চিকিত্সক লিখিত জানিয়েছেন, তাঁর চেম্বারে কোনও টিকাই দেওয়া হয়নি। এরপরই তাঁকে পুলিশ ছেড়ে দিয়েছে।
ডেপুটি জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের তত্ত্বাবধানে একটি কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। যারা অভিযুক্ত তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে জেলাশাসকের এমন মন্তব্যে প্রশ্ন উঠেছে। যাঁর বিরুদ্ধেই অভিযোগ, তাঁর একটা লিখিত বয়ানে কীভাবে পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিল?
তাতে তো তদন্তের গতি ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই। প্রশ্ন উঠছে, এতে কোনও তথ্য প্রমাণ লোপাটের সম্ভবনা থাকছে না তো?
টিকাচক্রের পর্দা ফাঁস হতেই অস্বস্তি বেড়েছে পানিহাটি পুরসভার। একজন চিকিত্সক তাঁর ব্যক্তিগত চেম্বারে টিকা দিলেন, তাহলে তাঁদের কাছে কীভাবে পুরসভার নথি পৌঁছে গেল? তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। অভিযুক্ত অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি পুরসভার প্যাড ও স্ট্যাম্প এনেছেন। কিন্তু টিকা নয়। এই দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।
অভিযুক্ত চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্র পুরসভার চুক্তিভিত্তিক মেডিক্যাল অফিসার ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর প্রাইমারি হেলথ সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। এক একটা আরবান এলাকার দায়িত্বে থাকেন মেডিক্যাল অফিসাররা। টিকা বণ্টনের দায়িত্বপ্রাপ্ত তাঁরা। সেক্ষেত্রে তিনি পুরসভার টিকা সরিয়েছিলেন কিনা, সে প্রশ্নের উত্তর হাতরাচ্ছেন তদন্তকারীরা। সঙ্গে পুরসভাও। আরও পড়ুন: পুরসভার স্ট্যাম্প ও প্যাড আনতেন, ভ্যাকসিন দেননি! পানিহাটি ভ্যাকসিন কাণ্ডে দাবি বিপ্লবের