বারাসত: মনে পড়ে ভোটে প্রচারে ঠিক কীভাবে পানা পুকুরে ডুব দিয়েছিলেন বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকার? মনে পড়ে কীভাবে ভোট প্রচারে ঝড় তুলতে গিয়ে চপ ভেজেছিলেন সুজাতা, চুল কেটেছিলেন সেলুনে ঢুকে? এ তো গেল প্রার্থীদের ভোটের স্টান্ট! কিন্তু, তাই বলে পিছিয়ে নেই ভোটাররাও। ভোট সপ্তমীতে যখন রাজ্যের নানা প্রান্তে লাগাতার রক্তপাত, হানাহানি, হিংসার ছবি দেখা গেল ঠিক সময় সময় একেবারে মাথায় হেলমট পরে ভোট দিতে দেখা গেল এক ভোটারকে। এদিন সকালে এই ছবি বারাসাত লোকসভার পূর্ব বারাসত আদর্শ বিদ্যাপীঠের।
১৪৫ নম্বর বুথের ভোটার নাম সৌর মণ্ডল। তাঁকেই এদিন হলুদ হেলমেট পরে ভোট দিতে দেখা যায়। তিনি আবার ঘটনাচক্রে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। সৌরর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, “কী আর করব বলুন তো! চারপাশে যা অবস্থা। তাই মাথা বাঁচাতে এই ব্যবস্থা।”
প্রসঙ্গত, এদিন সকাল থেকে কখনও সন্দেশখালি, কখনও ভাঙড়, কখনও বরানগর কখনও আবার ডায়মন্ড হারবারে হিংসার ছবি দেখা গিয়েছে। কোথাও আবার হাতাহাতিতে জড়িয়েছেন খোদ প্রার্থী। অন্যদিকে ভোটের খবর করতে গিয়ে মার খেতে হয়েছে টিভি-৯ বাংলার সাংবাদিকদেরও। ক্যানিংয়ের ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গোলাবাড়িতে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে সংঘর্ষের খবর আসে। তা কভার করতে গিয়ে আক্রান্ত হন চিত্র সাংবাদিক বান্টি মুখোপাধ্যায়। অন্যদিকে বিজেপি এজেন্টকে বসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল দমদম লোকসভা কেন্দ্রে। বনহুগলিতে সেই খবর করতে গিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের রোষানলে পড়েন টিভি-৯ বাংলার প্রতিনিধি সুশোভন ভট্টচার্য। হেলমেট দিয়ে বেধড়ক মারা হয়। ফাটে মাথা। পালাতে গেলে তাঁর হাতে ও কানে লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়।
এদিন এ প্রসঙ্গেও উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা যায় সৌরকে। বলেন, “সকালেই আমি টিভিতে দেখেছি একজন সাংবাদিককে আর্মির লোক ব্যাপক পিটিয়েছে। ওটা দেখে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছি। গোটা বাংলাজুড়ে সবাই তো মার খাচ্ছে। সাংবাদিকরাও বাদ যাচ্ছে না। ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার পথে রাজনৈতিক দলগুলি মারধর করছে। সে কারণেই নিজের সুরক্ষার জন্য সবরম মারের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমি হেলমেট পরে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। তবে বুথ পর্যন্ত আমাকে হেলমেট পরতে দিয়েছিল। বুথে ঢোকার সময় জওয়ানরা আমাকে হেলমেট খুলে ঢুকতে বলে।”