Medical Student Stuck In Ukraine: মুখচোরা, একলা ঘরে বইয়ে গুঁজে রাখত মাথা! হাবড়ার সেই মেয়ে আজ ইউক্রেনে চালাচ্ছে অসম লড়াই
Russia Ukraine Conflict: ঘরে জলের বোতল রয়েছে কয়েকটা। আর সম্বল কিছু শুকনো খাবার। বাইরে অজস্ত্র মানষের ভিড়। বড় বড় লাইট জ্বলছে আর ভারী বুটের আওয়াজ।
উত্তর ২৪ পরগনা: মাস তিনেক আগেই পাড়ি দিয়েছিলেন সেই দেশে। স্বপ্ন ছিল ডাক্তারি ডিগ্রিটা নিয়ে গ্রামে ফেরার। গ্রামের একমাত্র মেয়ে, যে কিনা ইউক্রেনে গিয়েছেন ডাক্তারি পড়তে। তিন মাস আগে সেদিনটায় গোটা গ্রাম ভেঙে পড়েছিল হাবড়ার কাশীপুর দক্ষিণ পাড়ার নিশা বিশ্বাসের বাড়িতে। সেদিন তাঁরা অভিনন্দন জানাতে এসেছিলেন তাঁকে। গ্রামের মেয়ে বিদেশ যাচ্ছে, ইতিহাস তৈরি করলেন তিনি। আজও আবার সেই গোটা গ্রামের মানুষই ভিড় জমাচ্ছেন নিশার বাড়িতে। প্রত্যেকেই উদ্বিগ্ন, বাবা শুধু কয়েকটা কথার জবাব দিচ্ছেন আর মা কাঁদছেন অঝোরে। যে মেয়েটা কেবল বইয়ে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতে নিজের একলা ঘরে। সে এখন একাই লড়াই চালাচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের হস্টেলের রুমে।
ঘরে জলের বোতল রয়েছে কয়েকটা। আর সম্বল কিছু শুকনো খাবার। বাইরে অজস্ত্র মানষের ভিড়। বড় বড় লাইট জ্বলছে আর ভারী বুটের আওয়াজ। হস্টেলের রুম থেকেই বের হতে দিচ্ছে না নিশাকে। মাকে ফোনেই সেকথা জানালেন তিনি। হাবড়ার কাশীপুর দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা জুলফিকার বিশ্বাসের মেয়ে নিশা বিশ্বাস গত ডিসেম্বরে ডাক্তারি পড়তে ইউক্রেনে গিয়েছেন। সেসময় বাবা মায়ের চোখেও ছিল জল, কিন্তু তা আনন্দের। আজও তাঁরা কাঁদছেন। দুশ্চিন্তায়।
দক্ষিণ বাংলা বালিকা বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন নিশা বিশ্বাস। তারপর ডাক্তারি পড়তে বিদেশে পাড়ি। যুদ্ধ শুরু হওয়ায় তার বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যদিও করোনা অতিমারির ফলে কলেজে ক্লাস হচ্ছে না, হোস্টেলে থেকেই অনলাইনে ক্লাস করছিলেন নিশা। যুদ্ধের আবহাওয়া তৈরি হওয়ায় বাড়ির সকলেই উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভারতীয় সময়ে বেলা সাড়ে বারোটার সময়ে নিশার সঙ্গে কথা বলেন বাবা-মা। ভিডিয়ো কলে হয় কথা। নিশা জানান, সেখানকার পরিস্থিতি খুব খারাপ। ঘর থেকে কাউকেই বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। ঘরে খাবার নেই। বাইরে প্রচুর মানুষের ভিড়।
নিশার পরিস্থিতি শুনে চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি তাঁর মা। নিশার মা বলেন, “মেয়েটা তো আমারে ঘরের বাইরে সেভাবে বের হতই না। বিদেশে পাঠিয়েছি পড়াশোনার জন্য, তাতেই আমাদের বিশাল চিন্তা হয়। সেখানে আবার যুদ্ধ। কী করবে, কীভাবে সামলাবে কে জানে! আমার মেয়েটাকে ফিরিয়ে দিক সরকার।”
নিশার বাবা বিশেষ কথা বলতে পারছেন না। কেবলমাত্র যা প্রশ্ন করা হচ্ছে, একটা শব্দে তার উত্তর দিচ্ছেন। কেবল বললেন, “আমার মেয়ে আমার কাছে ফিরে আসুক।” ইউক্রেনে আটকে থাকা বেশ কয়েকজন ভারতীয়ের মধ্যে রয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা, গোবরডাঙ্গার স্বাগতা সাধুখাঁও। উদ্বিগ্ন তাঁরও পরিবার। তাঁরা চাইছেন, যেন নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসতে পারে মেয়ে।