Jalpaiguri: কোটি টাকার জমি হাতানোর চেষ্টা, TMC নেতার বিরুদ্ধে কেস পর কেস, কেন ‘নিরব’ পুলিশ? প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের

Jalpaiguri: অভিযোগ, ললিতের দাদা প্রফুল্ল সরকারের কাছ থেকে চাপ দিয়ে ২৪ লাখ টাকা ধার নেওয়ার অছিলায় নিয়ে নেয় পাপন চাকলাদার। যার মধ্যে ১৮ লাখ টাকা পাপন ও তার পরিবারের লোকেদের নামে ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার করে নেওয়া হয়।

Jalpaiguri: কোটি টাকার জমি হাতানোর চেষ্টা, TMC নেতার বিরুদ্ধে কেস পর কেস, কেন ‘নিরব’ পুলিশ? প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের
চাপা উত্তেজনা এলাকায় Image Credit source: TV 9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 04, 2025 | 12:53 PM

ময়নাগুড়ি: কয়েক কোটি টাকার জমি কব্জা করতে ভিটেমাটি থেকে উৎখাত করার চেষ্টা। অভিযোগ যুব তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। থানায় বারবার অভিযোগ জানিয়ে লাভ না হওয়ায় শেষে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ অত্যাচারিতরা। চরম অস্বস্তি শাসক শিবিরে। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ি ব্লকের জাতীয় সড়ক সংলগ্ন উল্লা ডাবরি গ্রামে থাকেন ললিত সরকার, প্রফুল্ল সরকার। দীর্ঘদিন থেকেই তাঁদের ওই গ্রামে বাস। নিজেদের প্রায় ২২ বিঘা জমি রয়েছে। সেখানে চাষবাস। বছর কয়েক আগে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ  ফোর লেন তৈরি করতে উদ্যোগ নিলে শুরু হয় জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া। ওই সময় সরকার পরিবারের প্রায় দেড় বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ক্ষতিপূরণ বাবদ পায় ৫৯ লক্ষ টাকা। কিন্তু সমস্যাটা কোথায়?

সূত্রের খবর, সেই সময় প্রফুল্ল সরকার ও ললিত সরকারের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। অভিযোগ সেই সুযোগকেই কাজে লাগায় পাপন চাকলাদার। ছোট ভাই ললিত সরকারের পরিবারের উপর অত্যাচার করে তার বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করে পাপন চাকলাদার। পুরো পরিবার সমেত জেলে যান ললিত। এরপর থেকে গত ৪ বছর ধরে ঘরছাড়া। এখানেই শেষ নয়। রয়েছে আরও অভিযোগ। 

অভিযোগ, ললিতের দাদা প্রফুল্ল সরকারের কাছ থেকে চাপ দিয়ে ২৪ লাখ টাকা ধার নেওয়ার অছিলায় নিয়ে নেয় পাপন চাকলাদার। যার মধ্যে ১৮ লাখ টাকা পাপন ও তার পরিবারের লোকেদের নামে ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার করে নেওয়া হয়। বাকি ৬ লাখ টাকা কাগজে লিখে নিয়ে নেয়। এখানেই শেষ নয়। এরপর আরও ১০ লাখ টাকা চাওয়া হয় নতুন করে। না দিতে চাইলে ধেয়ে আসতে থাকে লাগাতার হুমকি। এরমধ্যে প্রফুল্লবাবু টাকা ফেরত চাইতে গেলে ফের অত্যাচার শুরু হয়। থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রফুল্ল সরকার। প্রফুল্লবাবুর অভিযোগ, কেস তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করতে থাকেন পাপন। বাড়ির সামনে ধরনাও দেন। এরইমধ্যে নিজের বসত ভিটায় ফিরতে চেয়ে ললিত সরকার তৃনমূলের বিভিন্ন নেতাদের কাছে আবেদন নিবেদন করেন। লাভ না হয়ে তিনি হাইকোর্টের দারস্থ হন। হাইকোর্টের নির্দেশ পেয়ে সম্প্রতি তিনি ওই জমিতে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করলে ফের শুরু হয় ঝামেলা। সমস্ত অভিযোগ যার দিকে সেই পাপন আবার এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসাবেই পরিচিত। 

এই খবরটিও পড়ুন

এ ঘটনায় বারবার ময়নাগুড়ি থানার দারস্থ হয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারগুলির। তাই বাধ্য হয়ে শুক্রবার বিকেলে পুলিশ সুপারের দারস্থ হন। ঘটনায় তৃনমূলের ময়নাগুড়ি ব্লক সভাপতি শিবশঙ্কর দত্ত বলেন, “পাপন চাকলাদার যুব তৃণমূল করে। তবে তার কাজের জন্য দল দায়ী নয়। যদি কাউকে গ্রেফতার করতে হয় তবে অবশ্যই করবে। দল এর জন্য দায়ী নয়।” তবে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পাপন। তাঁর দাবি, পুরোটাই মিথ্যা অভিযোগ। তিনি নিজে ললিত সরকারের হাতে আক্রান্ত হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। তাঁর দাবি, তিনি যুব তৃনমূলের জেলা সম্পাদক। এলাকায় তাঁর প্রভাব রয়েছে। ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিজেপির মদতে সরকার পরিবার তার নামে বারবার মিথ্যা মামলা করছে। ঘটনায় এলাকার রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতোর। 

বিজেপির জেলা সম্পাদক শ্যাম প্রসাদ বলেন, “ওই এলাকায় খোঁজ নিলেই জানা যাবে পাপন চাকলাদারের ইতিহাস। জমি দখল, তোলাবাজির জন্য উনি কুখ্যাত। ওনার হাতে শুধু সরকার পরিবার নয়, আরও বিভিন্ন মানুষ গত কয়েক বছর ধরে অত্যাচারিত হয়েছে। ভুক্তভোগীরা বারবার থানায় অভিযোগ জানালেও কোনও কাজ হয়নি।” যদিও পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।