সন্দেশখালি: তখনও চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। রীতিমত ভয়ে কাঁপছেন। সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নবাণের উত্তর দিলেন সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়ির ভিতর থেকে। অসংলগ্ন কথাবার্তার মধ্যেই প্রাক্তন তৃণমূলের অঞ্চল সম্পাদক অজিত মাইতি বলেই ফেললেন, তৃণমূলে এসে ভুল করেছন। শুধু তাই নয়, ফুঁসে উঠলেন শেখ শাহজাহানের ভাই শেখ সিরাজুদ্দিনের বিরুদ্ধে। সঙ্গে এও জানালেন, আগে বিজেপি করতেন। জোর করে তাঁকে তৃণমূলে আনা হয়েছে।
অথচ গতকাল (শনিবার ২৪ ফেব্রুয়ারি) যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল জমি দখলের বিষয়ে, সেই সময় গোটা ঘটনার দায় চাপিয়েছিলেন বিজেপির ঘাড়েই। একদিন যেতে না যেতেই পুরো ১৮০ ডিগ্রি পাল্টি খেলেন অজিত। তবে কি আবার বিজেপি-র ছাতার তলায় আশ্রয় চাইছেন? সে কথা যদিও সময় বলবে।
আজ এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সন্দেশখালি পৌঁছন রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক ও দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। একদিকে মন্ত্রী পার্থ যখন দাবি করেন যে পরিস্থিতি ঠিকই রয়েছে, সেই সময় বেড়মজুরে পথে নামেন গ্রামের মহিলাদের একাংশ। তাঁদের দাবি, “অজিত কোথায়? ওকে আমাদের হাতে তুলে দিন।”
এই পরিস্থিতির মধ্যেই জানা গেল তৃণমূল নেতা লুকিয়ে রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়রের বাড়িতে। সেখানে গ্রিলের ভিতর থেকে বললেন, “আমি ২০১৯ সালে বিজেপি করতাম। এরপর এই জায়গা তৃণমূলের হাত ছাড়া হতেই ওরা আমায় ডেকে মারধর করে। মেরে ধরে (শ্যাম সুন্দর, হলধর সর্দার) আমাকে তৃণমূলে যোগদান করিয়েছে। এগুলো আমি মন্ত্রীদের জানাতে পারিনি।” আরও বললেন, “সিরাজুদ্দিন নেতৃত্বে আমায় মেরে ধরে তৃণমূলে নিয়ে আসে।”এও বললেন, “আমি এখন দেখতে পাচ্ছি তৃণমূল আর সিরাজের সঙ্গে থাকাটা আমার ভুল হয়েছে।”
অথচ গতকালই তিনি বলেছিলেন, “আমার বিরুদ্ধে যে ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠছে, সব ভুয়ো। এলাকায় শেখ সাহেব নেই, শিবু হাজরা নেই, সামনে লোকসভা ভোট। তাই এলাকার ভোট ক্যাপচার করতে, এলাকার দখল নিতেই আমাকে অ্য়াটাক করা হচ্ছে। এরা সব বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতি। যা অভিযোগ সব মিথ্যা। তদন্ত করলে কিছুই পাওয়া যাবে না।” শেখ শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে ভেড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছে। সেই নিয়ে প্রশ্ন করতেই ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন অজিত মাইতি। বলেছিলেন, কোনও অভিযোগ নেই। সব ভুয়ো। আর সেই ব্যক্তি ২৪ ঘণ্টা পর বললেন, সিরাজের সঙ্গে থাকাটা ভুল হয়েছে। অর্থাৎ এক মুখে শোনা গেল দুই বুলি।