Shantanu Thakur: কাননে জোরাল বিদ্রোহের সুর, সেই আঁচেই ‘বিপ্লবের চড়ুইভাতি’তে মাতলেন শান্তনু
Shantanu Thakur: পিকনিকে রয়েছেন সায়ন্তন বসু ও জয়প্রকাশ মজুমদার, রিতেশ তিওয়ারিরাও। ইতিমধ্যেই দু'বার বৈঠক করেছেন শান্তনু ঠাকুর।
উত্তর ২৪ পরগনা: বিজেপিতে বিদ্রোহের সুর আরও জোরাল। এবার বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বনগাঁয় ন’হাটায় পিকনিকের আয়োজন করলেন সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের। রয়েছেন দাদা সুব্রত ঠাকুরও। পিকনিকে রয়েছেন সায়ন্তন বসু ও জয়প্রকাশ মজুমদার, রিতেশ তিওয়ারিরাও। একবার বিক্ষুব্ধদের নিয়ে আরও একবার মতুয়াদের সঙ্গে- ইতিমধ্যেই দু’বার বৈঠক করেছেন তিনি।
রবিবারই মতুয়া প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক সেরেছেন শান্তনু ঠাকুর। এর আগেও সায়ন্তন বসু ও জয়প্রকাশ মজুমদাররা শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে গিয়েছিলেন। শনিবার বৈঠক হয় কলকাতাতেও। পরপর বিক্ষুব্ধদের নিয়ে বৈঠকের আবহেই পিকনিকের আয়োজন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। তবে এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, পিকনিকে নেই বনগাঁ দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন মজুমদার। তিনি রাজ্য পার্টি অফিসে বসে জানিয়ে দিয়েছিলেন, “আমিও বিধায়ক, কিন্তু আমি শান্তনু ঠাকুরদের সঙ্গে নেই।”
এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই পিকনিক বিজেপির অন্তর্দলীয় আবহকে যথেষ্টই গরম করছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এ প্রসঙ্গে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, “রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত ছোটগল্পের চড়ুইভাতি। সামাজিক একটা অনুষ্ঠান, এর মধ্যে রাজনীতি নেই। পরিচিত লোকজন মিলে, আমাদের এখানকার যাঁরা কোর কর্মী ছিলেন, তাঁদের নিয়ে বসা। এটা সংঘবদ্ধতা। তাঁঁদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার চেষ্টা। বহু কর্মী এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে পাত পেড়ে বসে খাওয়া।” তবে এই চড়ুইভাতির পিছনে কি কোনও ইঙ্গিত রয়েছে? বিজেপির বর্যীয়ান নেতা সাফ বললেন, “একটা তো ইঙ্গিত রয়েইছে। সেটা হল কর্মীদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকা। দূরে না থাকা।”
প্রসঙ্গত, গত শনিবারই কলকাতার পোর্ট গেস্ট হাউজ়ে বিজেপির বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর নেতৃত্বের বৈঠক হয়। ডাকা হয় দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া বাঁকুড়া, নদিয়ার বিক্ষুব্ধ বিধায়কদেরও। যাঁরা মূলত কয়েক দশক ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত। যাঁরা একসময়ে বঙ্গে বিজেপির আন্দোলনের রূপরেখা নির্ধারিত করতেন, তাঁরা ছিলেন বৈঠকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিক্ষুব্ধ নেতারা যখন আলাদা একটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করছে, তাতে বর্তমান নেতৃত্বকে এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। শুরুটা হয়েছিল সায়ন্তন বসুর হাত ধরে। সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বাদ পড়েন সায়ন্তন বসু। সঙ্গে সঙ্গেই হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান তিনি। সেই শুরু…গত কয়েকদিনে সেই রীতিই ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজেপিতে। সাংগঠনিক জেলা সভাপতি এবং ইনচার্জদের নাম ঘোষণা পরে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার কয়েকজন বিধায়ক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন। দলের রাজ্য ও জেলার বিভিন্ন গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছেন বাঁকুড়ার ৫ বিধায়কও।
এদিকে, মতুয়া সম্প্রদায়ের ভোটের ওপর নির্ভর করে লোকসভা নির্বাচনে যে ফল দেখেছিল পদ্ম শিবির। কিন্তু নতুন রাজ্য ও জেলা কমিটিতে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের জায়গা না দেওয়ায় ভীষণভাবে বিরক্ত শান্তনু ঠাকুর। মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে নিজের ক্ষোভের কথা জানাতেও প্রস্তুত। তবে এখনও পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের কাছে এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি।
এদিনের এই পিকনিক যে কেবল একটা সাধারণ চড়ুইভাতি নন, তা ভালই আঁচ করতে পারছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বরাও। তবে এই চড়ুইভাতি ও তার নির্যাসকে পদ্মশিবির কীভাবে দেখে, সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন: Madan Mitra: সতর্ক করার পরই ফের ফেসবুক লাইভের ঘোষণা ‘বেপরোয়া’ মদনের! কী বার্তা? জল্পনা তুঙ্গে
আরও পড়ুন: Tathagata Roy: ‘প্রদর্শিত হবে নেতাজির কীর্তি’, বাংলার ট্যাবলোয় অনুমোদন দিতে প্রধানমন্ত্রীকে আর্জি তথাগত-র