সন্দেশখালি: উপলক্ষ শীত বস্ত্র। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে সেই শীত বস্ত্র দিতে গিয়েই নিজের মনের কথা বলে দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দ্ব্যার্থহীন ভাষায় বিজেপি নেতা বোঝালেন শীতবস্ত্র সবাই পাবে না। অর্থাৎ মুসলিমদের শীত বস্ত্র দেওয়া হবে না। শুভেন্দু ‘সোজা কথা সোজা ভাবে’ বুঝিয়ে বলেছেন, “ভোট নেই, আমরাও নেই।”
সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পরই মঙ্গলবার সন্দেশখালিতে সভা করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। সরকারের সমালোচনা করার পাশাপাশি আদ্যোপান্ত তিনি তাঁর বক্তৃতায় বুঝিয়ে দিয়েছেন মুসলিম ভোটকে তিনি গুরুত্বই দিচ্ছে না। শুধু মুখেই বলেননি। একদম হিসাব কষে শুভেন্দু বলেছেন, “লোকসভা ভোটে এই বাংলায় ৩৯ শতাংশ হিন্দু বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। আর ৫ শতাংশ হিন্দু সিপিএম তৃণমূল ছেড়ে বা ভোট দিতে না যাওয়া হিন্দু যদি ভোট দেন তাহলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হবেন।” অর্থাৎ এ বাংলায় বিজেপির সরকার গঠন করবে। মুখ্যমন্ত্রী যখন গতকালের সভা থেকে বারেবারে শিবু হাজরা-শেখ শাহজাহানদের ভুলে যেতে বলেছেন, সেই সময় শুভেন্দু আবার সন্দেশখালীর জনগণকে তাঁদের মনে করতে বলেছেন।
এ দিন বিরোধী দলনেতা একদম চাঁচাছোলা ভাষায় বলেই দিয়েছেন কোন-কোন জায়গায় ভোট বিজেপি পাবে আর কোথায় পাবে না। তিনি বলেন, “সন্দেশ খালিতে ২৭ হাজার বিধানসভায় জিতব। বসিরহাট উত্তর পারব না মুসলিম, বসিরহাট দক্ষিণ জিতব। হিন্দু আছে।” কিন্তু মুসলিম ভোট ঝুলিতে ঢুকবে না বলে একটু শঙ্কিত নন তিনি। উল্টে হিন্দুদের একাট্টা হওয়ার বার্তা দিলেন। বললেন, “আমি পাঁচ হাজার শীত বস্ত্র দিলাম। ২৮টি শক্তিকেন্দ্র সন্দেশখালিতে। সেখানে এই শীতবস্ত্র দেওয়া হবে। আর ২৮টা শক্তি কেন্দ্র মানে হিন্দু প্রধান শক্তিকেন্দ্র। মুসলিম এলাকায় আমাদের ব্যাপার নেই কিছু। সোজা কথা সোজা বলা ভাল।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাশের প্রশ্ন এখানেই, যেখানে শুভেন্দু রাজ্য দখলের কথা বলছেন সেখানে মুসলিম ভোট ছাড়াই কি লড়াইয়ের ময়দানের গুটি সাজাচ্ছেন তিনি? রাজ্যের মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “উনি তো সব সময় হিন্দু-মুসলিম বলেই নিজের বক্তব্য রাখেন। সব সময়ই বড় বড় ভাষণ। তবে ভোটের রেজাল্ট এই কথা বলে না। এর আগে খোদ প্রধানমন্ত্রী ওইখানে গিয়ে একটা আবহ তৈরি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বসিরহাট লোকসভায় তৃণমূল বিপুল ভোটে জিতেছে।”