HAM Help: ভুল ট্রেনে চেপে বিহার থেকে বাংলা! হ্যাম রেডিও ফেরাল ঘরের বউকে
Ham Radio: পার্বতী দেবীকে পেট্রাপোল থানার নরহরিপুর ঠাকুরতলা এলাকার কয়েকজন ওই এলাকার একটি দুর্গামন্দিরে দেখতে পান।
উত্তর ২৪ পরগনা: মানসিক কিছু সমস্যা রয়েছে বিহারের পূর্ণিয়ার বাসিন্দা পার্বতী দেবীর। এমনিতে সবই করেন, কিন্তু থেকে থেকেই গোলমাল করে ফেলেন। সম্প্রতি ভুল ট্রেনে উঠে পড়েছিলেন এই মহিলা। বিহার থেকে এসে পৌঁছন বাংলায়। তাও আবার সীমান্ত এলাকা পেট্রাপোলে। হ্যাম রেডিওর সাহায্যে যোগাযোগ করে অবশেষে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল পার্বতীকে। খুব খুশি চনমনে এই যুবতী। চেনা মুখ এতদিন পর দেখে হাসি যেন থামছেই না। কখনও এসে পরিবারের লোকের হাত চেপে ধরছেন। কখনও আবার চুপটি করে দাঁড়াচ্ছেন পরিচিতদের পাশে। পরিবারের লোকেরও স্বস্তি অবশেষে।
পার্বতী দেবীর বয়স ২৭ বছর। বিবাহিত তিনি। পার্বতী দেবীকে পেট্রাপোল থানার নরহরিপুর ঠাকুরতলা এলাকার কয়েকজন ওই এলাকার একটি দুর্গামন্দিরে দেখতে পান। দু’দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরও ওই মহিলা সেখানেই রয়েছেন দেখে সন্দেহ হয় এলাকার লোকজনের। এরপরই নরহরিপুর হঠাৎ সংঘের সদস্যরা মহিলার সঙ্গে কথা বলেন। অসংলগ্ন কথা শুনে বুঝতে পারেন মানসিকভাবে কিছুটা সমস্যা রয়েছে তাঁর।
ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্বতী দেবীকে তাঁরা নিজেদের উদ্যোগে পাশেই মায়া বিশ্বাস নামে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে রেখে প্রশাসনকে গোটা ঘটনাটি জানায়। প্রশাসন হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে পার্বতী দেবীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়। তারপর শনিবার প্রশাসনের আধিকারিকরা ওই মহিলার পরিবারের হাতে তাঁকে তুলে দেন। এ বিষয়ে নরহরিপুর হঠাৎ সংঘের সদস্য কল্যাণ বিশ্বাস বলেন, “আমরা দেখি পাড়ায় একজন অল্পবয়সী মহিলা বসে আছেন। জানান তিনি বিহারের পূর্ণিয়ার বাসিন্দা। দেখে বোঝা যাচ্ছিল না, কিন্তু কথা শুনে কেমন একটা মনে হয়েছিল। এরপরই প্রশাসনকে জানাই। উনি বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন এর থেকে আনন্দের আর কিছু নেই।”
কল্যাণ বিশ্বাস জানান, “গত ১৬ জানুয়ারি ছয়ঘড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকা পেট্রাপোল থানার আওতায় আমাদের নরহরিপুর ঠাকুরতলায় সন্ধ্যাবেলা দেখতে পাই। ওনাকে দু’দিন নিরাপদ আশ্রয়ে রাখি। মায়া বিশ্বাস নামে একজনের বাড়িতে ছিলেন। আমাদের পঞ্চায়েত প্রধান ও গ্রাম সাংসদ পেট্রাপোল থানার ওসির সঙ্গে যোগাযোগ করে হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে ওই মহিলার পরিবারকে খুঁজে পাওয়া যায়।” পার্বতীর স্বামীর নাম সন্তোষ কুমার। তিনি বলেন, মাঝেমধ্যেই শ্বশুরবাড়ি থেকে বাপের বাড়িতে যাতায়াত করেন স্ত্রী। বাপের বাড়ি মুরলীগঞ্জ এলাকায়। ট্রেনে যাওয়ার সময় কোনওভাবে ভুল ট্রেনে উঠে পড়ায় এই বিপত্তি হয়। শনিবার পেট্রাপোল থানা থেকে বনগাঁ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অশেষ বিক্রম দস্তিদারের উপস্থিতিতে তাঁকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।