Narendrapur: ‘সব দোষ স্বামীদের? ও যে ১৩ বছর ধরে আমাকে…’, বিস্ফোরক দাবি স্ত্রী খুনের চেষ্টায় অভিযুক্তের

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুপারি কিলার লাগিয়ে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টায় গ্রেফতার হয়েছেন নরেন্দ্রপুরের এক ব্যক্তি। স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, স্বামী চাননি বউয়ের হাতে স্মার্ট ফোন থাকুক। এদিকে ছেলেমেয়ের পড়াশোনার জন্য লুকিয়ে একটি ফোন কেনেন তিনি। সেই ফোনে স্ত্রীকে কথা বলতে দেখে ফেলায় সুপারি কিলার লাগিয়ে খুনের চেষ্টা করেন স্বামী। নরেন্দ্রপুর থানার পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী রাজেশ ঝাঁকে গ্রেফতারও করে। ধরা পড়ে আরও একজন। কিন্তু থানায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৩ বছরের জমানো অভিযোগ উগরে দেন এই যুবক। রাজেশের বিস্ফোরক দাবি, দিনের পর দিন স্ত্রী তাঁকে মানসিকভাবে নির্যাতন করে চলেছেন। বার বার ডিভোর্স চেয়েছেন স্বামীর কাছে। রাজেশের দাবি, স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে সংসার করবেন বলে সব কিছু মুখ বুজে মেনে নিয়েছেন। অবশেষে শুক্রবার রাতে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে।

নরেন্দ্রপুর থানা এলাকার লস্করপুর পেয়ারাবাগান এলাকার বাসিন্দা রাজেশ ঝাঁ। শুক্রবার রাতে তাঁরই বাড়িতে ঢুকে দুই যুবক তাঁর স্ত্রীর গলায় ছুরি ধরে। কোপও বসায় বলেই অভিযোগ। রাজেশের স্ত্রীর গলায় সাতটি সেলাই পড়ে। যা নিয়ে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন পাড়ার লোকজনও। রাজেশকে ধরে তাঁরাই পুলিশের হাতে তুলে দেন। দাবি করেন, দোষীর যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। এদিকে রাজেশ থানায় দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন। স্ত্রী তাঁর সম্পত্তি হাতিয়ে সরে পড়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল বলে দাবি তাঁর। একইসঙ্গে তিনি বলেন, কোনও ঘটনা ঘটলেই তদন্ত শুরুর আগেই একজন স্বামীকে কাঠগড়ায় তুলে দেওয়া হয়। স্ত্রী কী করেছে তা কেউ জানতে চায় না।

রাজেশ ঝাঁ-এর কথায়, “যখনই কোনও কিছু হয় স্বামীই দোষী হয়ে যায়। স্ত্রীর কোনও দোষ থাকে না। স্ত্রী যে দিনের পর দিন মানসিক নির্যাতন করে যাচ্ছে সেটা কেউ দেখছেন না। ১৩ বছর ধরে ও আমাকে টর্চার করে চলেছে। সব সময় অপমান করে। কিছু নিয়ে শুরু হলে তিন চার ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে। ১২টা ১টার সময় আমি অফিস থেকে আসি। তারপর আর সময় থাকে যে আমি স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করব? খেতে বসলে অনবরত আজেবাজে কথা বলেই যায়। রাতে খেয়ে উঠে আমি রিপোর্ট তৈরি করতে বসি। ভোর অবধি কাজ করি। সেখানে সবসময় আমাকে মানসিক চাপ দেয়। সেটা কেউ দেখে না। ওতো ১৩ বছর ধরে ডিভোর্স চেয়ে চলেছে। আমিই তো এতদিন ধরে গুছিয়ে রাখলাম সবাইকে। ওর প্রথম থেকেই পরিকল্পনা ছিল আমার যা সম্পত্তি সেগুলি হাতিয়ে আমাকে সরিয়ে দেওয়ার। আমি কাকে পাঠিয়েছি কী করেছি সেটা পরে দেখবেন। আগে দেখা হোক আমাকে ১৩ বছর ধরে কী করা হয়েছে। আমি কোনও চিৎকার চেঁচামেচি করিনি কখনও। কাউকে কিছু জানতে দিইনি। এত অপমান মুখ বুজে শুধু সয়ে গিয়েছি। তা নিয়ে কেউ কিছু বলছে না।”

আরও পড়ুন: নরেন্দ্রপুরে স্ত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার স্বামী