Parcel Blast: পার্সেল বিস্ফোরণ! ‘বাবা কোনওদিন অনলাইনে জিনিস কেনে না’, কে পাঠাল উপহার, হতবাক বাবলুর ছেলে
Raigung: বাবলু-সহ তিনজন গুরুতর আহত অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি।
উত্তর দিনাজপুর: বিস্ফোরণের পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গেলেও আতঙ্কে কাঁপছে কলুয়া গ্রাম। এ গ্রামেরই ছেলে বাবলু চৌধুরি ওরফে ডবলের হাতে শুক্রবার এক টোটো চালক এসে একটি পার্সেল দিয়ে যান। তা খুলতেই ভয়াবহ শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বাবলু-সহ তিনজন গুরুতর আহত অবস্থায় রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। গ্রামের লোকজন বুঝেই উঠতে পারছেন না কে বা কারা এমন কাণ্ড ঘটাল। কেনই বা এলাকায় ভদ্র সভ্য ছেলে হিসাবে পরিচিত বাবলুর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটল।
এলাকার লোকজনের দাবি, কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, দ্রুত পুলিশি তদন্তে রহস্যের বেড়াজাল উন্মোচিত হোক। গ্রামে ফিরুক শান্তি, স্বস্তি। এদিকে হেমতাবাদের বাহাড়াইলে বিস্ফোরণের পর শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান উত্তরবঙ্গের আইজি ডিপি সিং। সঙ্গে ছিলেন রায়গঞ্জ রেঞ্জের ডিআইজি অনুপ জয়সওয়াল, রায়গঞ্জের পুলিশসুপার সানা আখতার-সহ পুলিশের অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। ঘটনায় টোটোয় থাকা একজনকে পুলিশ আটক করেছে বলে সূত্রের খবর। এ বিষয়ে আইজি জানিয়েছেন ঘটনার তদন্ত চলছে।
বাবলু চৌধুরির ছেলে ফিরোজ আখতার চৌধুরি জানায়, “আমি প্রথমে ঘটনার কিছু জানতামই না। আমার জ্যেঠিমা ফোন করে বলে যে বাহাড়াইলে বোমা ফেটেছে। শুনে তো আমরা একেবারে আতঙ্কে আতকে উঠি। কাকিমাও ছিল পাশে। আমাকে জ্যেঠিমা বললেন মাকে খবরটা দিতে। মা জমির দিকে ছিল। মাকে বলতেই কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। আমিই মাকে বললাম বাবাকে রায়গঞ্জে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে। এখন কাঁদলে চলবে না, বাবাকে দেখে এসো আগে। আমার বাবা এমন সহজ সরল মানুষ, তাঁর সঙ্গে কারও ঝগড়া হতে পারে এটা ভাবতেই পারি না। শুনেছি টোটোয় করে এসে একজন পার্সেল নামিয়ে দিয়ে গিয়েছে। তাতে বাবার নাম লেখা ছিল। বলা হচ্ছে অনলাইনে পার্সেল এসেছে। আমার বাবা এরকম কোনও কেনাকাটা কখনওই করে না। এই প্রথম। এমনও বলা হয়েছে পার্সেলের উপর ফ্যানের ছবি আঁকা ছিল। কিন্তু ভিতরে মোটেই তা ছিল না। ওষুধের সঙ্গে কোনও উপহার এল, সেটা আলাদা জিনিস। এরকম কখনওই হয় না।” তবে ফিরোজ জানায়, তার বাবার দোকানের পাশে যে দর্জির দোকান রয়েছে, যিনি আহত হয়েছেন উনি অনলাইনে জিনিসপত্র কেনেন।
কলুয়ার বাসিন্দা জরিপ হোসেন বাবলুর প্রতিবেশী। একই পাড়ায় থাকেন। এমন ঘটনায় তাজ্জব জরিপ বলেন, “আমরা ভয়ে আতঙ্কে এখন পাড়ার বসে রয়েছি। গ্রামের মানুষ এভাবে মৃত্যুর সঙ্গে হাসপাতালে লড়াই করছে ভাবতেই পারছি না। আরও কিছু হবে কি না তাও তো বলতে পারছি না। বাবা, মা বলছে কোথাও বেরোতে হবে না।” জেলার পদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের দাবি, এটা আইইডি বিস্ফোরণ। বাহাড়াইল গ্রামে বাবলুর ওষুধের দোকান। সেই বাড়ি থেকে কলুয়া গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ। প্রতিদিনই সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাহাড়াইলে দোকান করে রাতে ফিরে আসেন। গ্রামের শান্ত স্বভাবের গোলমালে না থাকা ছেলেটি কেন এমন বিপদে পড়ল তা ভেবেই পাচ্ছেন না গ্রামের লোকেরা।
আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রীই একমাত্র মতুয়াদের নাগরিকত্ব দিতে সচেষ্ট, বাকিরা না’, বিস্ফোরক দাবি শান্তনু ঠাকুরের