বাদুড়িয়া: প্রায় দু’বছর হয়ে গিয়েছে। ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি পাচ্ছেন না বার্ধক্য ভাতা। কেন? জীবিত থেকেও সরকারি খাতায় তিনি যে পেয়েছেন মৃতের তকমা। গোটা ঘটনায় অভিযোগের তীর উপপ্রধানের দিকে।
কী ঘটনা?
বসিরহাটের বাদুড়িয়া ব্লকের যদুরহাটী উত্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের পিঙ্গলেশ্বর গ্রাম। এই গ্রামেরই বাসিন্দা বছর একাত্তরের সহিদুল মণ্ডল। তিনি পেশায় একজন কৃষক। জীবিত অবস্থায় বহাল তবিয়তে এখনও ঘুরে বেড়ালেও, সরকারি রেকর্ডে তিনি মৃত।
জানা গিয়েছে, বিগত ১০ বছর ধরেই তিনি বার্ধক্য ভাতা যথা সময়ে পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু বাধ সাধলো ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস। তখন থেকে হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় বৃদ্ধের বার্ধক্য ভাতা। এরপর তিনি ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করেন। ব্যাঙ্ক থেকে সঠিক কোনও কারণ জানতে না পারায় তিনি যান স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতে। তবে সেখানেও মিলল না ফল। অবশেষে তিনি বাদুড়িয়া বিডিও অফিসের নোডাল অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন ওই বৃদ্ধ। তখনই তিনি জানতে পারেন বার্ধক্য ভাতার যে তালিকা রয়েছে সেই তালিকায় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এবং সেখানে তাঁকে ‘মৃত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন স্বয়ং বর্তমান যদুরহাটী উত্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জাইদুল হক বৈদ্য।
বৃদ্ধের অভিযোগ, তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছে যে তালিকায় সেই তালিকায় সই করেছেন জাইদুল নিজে। আর যার জেরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে তার বার্ধক্য ভাতা। তবে এই ব্যাপারে কী বলছেন জাইদুল? তিনি ঘটনার সত্যতা একপ্রকার স্বীকার করে নিয়ে জানান, প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে এটা হতে পারে।
অন্যদিকে, এই ব্যাপারে বর্তমান পঞ্চায়েত প্রধান কনকলতা মণ্ডলকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “যে সময় জাইদুল হক এই কাজটি করেছিলেন সেই সময় আমি নিজে শারীরিক অসুস্থতার জন্য ছুটিতে ছিলাম। তখন পঞ্চায়েতের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ছিলেন বর্তমানের উপপ্রধান জাইদুল হক বৈদ্য। যা করার তিনিই করেছেন। তবে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যাপারটি সম্পর্কে অবগত করেছি। চাইবো যত দ্রুত সম্ভব ওই ব্যক্তির বার্ধক্য ভাতা যেন চালু হয়।”
সহিদুল মণ্ডল বিষয়টি নিয়ে বাদুড়িয়ার বিডিও, উত্তর ২৪ পরগণার জেলা শাসক, বাদুড়িয়ার বিধায়ক, যদুরহাটী উত্তর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সহ বাদুড়িয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে অভিযোগ জানিয়েছেন। দিন আনা দিন খাওয়া অবস্থায় দিন গুজরান হয় বৃদ্ধ কৃষক সহিদুলের। তার কাছে এই বার্ধক্য ভাতা ছিল পরম প্রাপ্তির। কিন্তু দীর্ঘ ১৬ মাস তা বন্ধ হয়ে থাকায় যথেষ্ট বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছে তার পরিবার। তিনি চাইছেন অবিলম্বে যেন তার মৃতের তকমা উঠে গিয়ে তাকে জীবিত ঘোষণা করা হয় এবং তার বার্ধক্য ভাতা যেন পুনরায় চালু হয়।
আরও পড়ুন: Petrol Price Today: দেশে ৮১ দিন পরিবর্তিত পেট্রোল ডিজেল, আন্তর্জাতিক মার্কেটে অপরিশোধিত তেলে গতি